পার্বত্য চট্টগ্রামে আর কাউকে খুন ও চাঁদাবাজির কারণে আতঙ্কে থাকতে হবে না বলে অভয় দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি আজ বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে তিন পার্বত্য জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরে তিন পার্বত্য জেলায় নির্বিচারে খুন ও চাঁদাবাজির কারণে পরিবেশ অশান্ত হয়ে উঠেছে। ভয়ংকর এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সেই ভয়ংকর পরিস্থিতি থামানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যেকোনো মূল্যে শান্তি–শৃঙ্খলা ফিরিয়ে নিয়ে আসব। যেন এখানকার মানুষ বলতে পারে, আমরা বিপদমুক্ত হয়েছি। এই এলাকার মানুষ থাকবে সুখে–শান্তিতে।’
আজ বেলা ১১টায় রাঙামাটি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং। সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পাহাড়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের ধৈর্যসহকারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দুষ্কৃতকারীদের বিষয়ে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে দুর্বল মনে করলে ভুল হবে।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আগের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বর্তমানে অনেক শক্তিশালী। যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করার সক্ষমতা তাদের রয়েছে।
জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনাদের কাছ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান সংঘাত, চাঁদাবাজি ও অপহরণের বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। এ বিষয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে। তাঁর সিদ্ধান্তমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থীবিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রাঙামাটি আসনের সাংসদ দীপংকর তালুকদার, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাফিনুল ইসলাম, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, পুলিশের মহাপরিচালক মো. জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, চাকমা সার্কেলের প্রধান রাজা দেবাশীষ রায় ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া তিন পার্বত্য জেলার উচ্চপদস্থ সেনা-বিজিবি কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন।
২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর মধ্যে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে প্রাণঘাতী সংঘাত শুরু হয়। এই সংঘাতে আঞ্চলিক দল ইউপিডিএফের ২৯ জন, জেএসএস এমএন লারমার ২৩ জন, ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) একজন ও ১৩ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হন।