পুরুষদের পেশির শক্তি নারীদের তুলনায় বেশি। কারণ নারীদের তুলনায় পুরুষদের দেহের ওপরের অংশ বেশি শক্তিশালী। এই কারণেই জোরালো ঘুষি মারতে পারে পুরুষেরা। বিবর্তনের পথ ধরে পুরুষের দৈহিক গঠনে এমন পরিবর্তন এসেছে।
সম্প্রতি এক নতুন গবেষণায় এই তথ্য প্রমাণিত হয়েছে। সায়েন্স ডেইলি সাময়িকীতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইউটাহ ও উফোর্ড কলেজের একদল গবেষক চালিয়েছেন এই গবেষণা। জার্নাল অব এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজিতে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, সংঘাত বা মারামারি মানুষের বিবর্তনের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সংঘাতের বিষয়টির কারণেই সময়ের বিবর্তনে মানুষের দৈহিক গঠনে নানা পরিবর্তন এসেছে। অন্যান্য প্রাণীর মতো মানুষও তার দেহের কিছু কিছু অংশকে অস্ত্র হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছে। এমনই একটি অস্ত্র হলো মানুষের হাত।
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ও অধ্যাপক ডেভিড কেরিয়ার বলেন, ‘স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে সংঘাতে জড়ানোর প্রবণতাটি খুবই স্বাভাবিক। নারী ও পুরুষের দৈহিক গঠনেও যে পরিবর্তন এসেছে, সেটির পেছনেও এই অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি আছে।’
গবেষকেরা বলছেন, পুরুষে-পুরুষে সংঘাতের দীর্ঘ ইতিহাস আছে। সময়ের পরিবর্তনে বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় পুরুষের দৈহিক গঠন বদলেছে এবং বিশেষ করে এই বদল এসেছে শরীরের যেসব অংশ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয় সেগুলোতে। আগের গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের হাতের কিছু অংশ পুরো হাতকে রক্ষাও করে থাকে। যখনই মানুষ হাত মুঠো করে, তখন তা অস্ত্রে রূপান্তরিত হয়। আবার কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের দেহের ওপরের অংশে থাকা হাড়ের শক্তিমত্তার সঙ্গে দেহের নিচের অংশের হাড়ের পার্থক্য রয়েছে।
ডেভিড কেরিয়ার বলছেন, ‘যদি কেউ ঘুষি মারায় বিশেষায়িত হয়, তবে দেখা যাবে, নারীদের তুলনায় পুরুষদের ঘুষিতে শক্তি বেশি। কারণ ঘুষি মারার ক্ষেত্রে যেসব পেশি কাজে লাগে, সেগুলো পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি শক্তিশালী।’
গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের তুলনায় পুরুষদের ঘুষির শক্তি গড়ে ১৬২ শতাংশ বেশি থাকে। বলা হচ্ছে, সবচেয়ে দুর্বল পুরুষের ঘুষিও সবচেয়ে সবল নারীর তুলনায় শক্তিশালী। বলা হচ্ছে, সংঘাত বা মারামারিতে অংশ নেওয়ার ইচ্ছার মতো বাস্তবিক কারণেই বিবর্তনের পথ ধরে পুরুষের দৈহিক গঠনে এমন পরিবর্তন এসেছে।