মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসানোর পর আদালতের নির্দেশে অব্যাহতি পেয়েছেন খুলনার স্থানীয় দৈনিক খুলনাঞ্চল পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক এম এ জলিল। গতকাল বুধবার দুপুরে মামলার অভিযোগ গঠনের দিন খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. সাইফুজ্জামান হিরো এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর খুলনার গোয়েন্দা পরিদর্শক পারভীন আক্তার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একই অধিদপ্তরের ‘ক’ সার্কেলের পরিদর্শক হাওলাদার মো. সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন, এম এ জলিলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ সালের ৩৬(১) সারণির ১৪(খ) ধারার অভিযোগ গঠনের মূল উপাদান প্লেস অব অকারেন্স (অপরাধ সংঘটনের স্থান) নেই। এ কারণে ফৌজদারি কার্যবিধির ২২১ ধারার বিধান অনুযায়ী আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আইনগত কোনো সুযোগ নেই। তদন্ত কর্মকর্তা তাঁর প্রতিবেদনে আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করছেন। অথচ আসামির দখল বা হেফাজত থেকে কথিত মাদক উদ্ধার ও জব্দ করার বিষয় প্রমাণিত হয়েছে—এ ধরনের কোনো কিছু উল্লেখ করেননি তিনি।
এ ছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এম এ জলিল একজন কুখ্যাত মাদক কারবারি। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা কী কী দালিলিক এবং মৌখিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আসামিকে কুখ্যাত মাদক কারবারি হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তা প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই। কাজেই সুস্পষ্টভাবে আদালতে প্রতীয়মান হয়, এজাহারকারী ও তদন্ত কর্মকর্তা পরিকল্পিতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে এম এ জলিলকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর জন্যই মিথ্যা মামলা ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ জুলাই খুলনা নগরের সদর থানার মুসলমান পাড়ায় জলিলের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ সময় তাঁর বাড়ির পাশের একটি নালা থেকে ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখিয়ে তাঁকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলা করেন পারভীন আক্তার ও হাওলাদার মো. সিরাজুল ইসলাম।