করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এয়ারলাইনসগুলোর পাশে থাকার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রধান। এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশসমূহের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধানদের অংশগ্রহণে ‘কোভিড-১৯ ইনফরমেশন শেয়ারিং’ শীর্ষক এক টেলিকনফারেন্সে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ওই সভায় বাংলাদেশের পক্ষে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান অংশগ্রহণ করেন। টেলি কনফারেন্সে চীন, ভারত, বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ ৩৩টি দেশ ও ৩টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন থাইল্যান্ডে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল অফিসের পরিচালক অরুন মিশ্র।
টেলিকনফারেন্সে করোনা মহামারি রোধে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম ও বেসামরিক বিমান চলাচল ব্যবস্থার যাবতীয় পদক্ষেপ নিয়ে তিনি বক্তব্য দেন। এতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এ অঞ্চলের দেশগুলোতে গৃহীত ব্যবস্থাদি বিশেষ করে এভিয়েশন ইন্ডাষ্ট্রিতে এর প্রভাব এবং বিমান চলাচল ব্যবস্থায় যাবতীয় নীতিমালা, বিধিবিধান ও অন্যান্য কার্যক্রম সম্পর্কে প্রত্যেক রাষ্ট্রের সিভিল এভিয়েশন প্রধানরা বক্তব্য দেন।
বেবিচক সূত্র জানায়, সভায় অভিজ্ঞতা বর্ণনার পাশাপাশি কন্টিজেন্সি প্ল্যান ও নিরাপদ আকাশ চলাচল নিশ্চিত করনে যাবতীয় বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। কোভিড-১৯-এর প্রভাব রোধে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মপন্থা নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক বক্তব্য পেশ করা হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, বর্তমানে করোনা ভাইরাসে মহামারীর কারণে ধস নেমেছে এয়ারলাইনস ব্যবসায়। অধিকাংশ দেশ বিমান চলাচল বন্ধ রেখেছে। ফলে হাজার হাজার কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এয়ারলাইনসগুলো। এমতাবস্থায় করোনা ভাইরাস পরবর্তী সময়ে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হলেও তিন মাস ধরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডিং চার্জ, আকাশ ব্যবহারসহ কয়েকটি খাতে যে চার্জ দিতে হয় তা মওকুফ দাবি করেছেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে এই ভিডিও কনফারেন্সের নেতৃত্ব দেন সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান। তিনি আশ্বস্ত করেছেন বিমান কোম্পানি ও সংস্থাসমূহের এই দাবি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।
জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘টেলিকনফারেন্সে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করা হয়েছে। আইকাও-এর দিক নির্দেশনাগুলো আমরা মেনে চলছি কি না সে বিষয়েও আলোচনা হয়। ফ্লাইট বন্ধ থাকার কারণে উড়োজাহাজগুলোর রক্ষণাবেক্ষন, পাইলটের কারেন্সি, অপারেশনাল ক্যাটাগরি ঠিক রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সামনে কিছু হিউম্যানিটেরিয়ান ওয়ার্ক চলবে, সেগুলোতে সাপোর্ট দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ন্যাশনাল ফ্যাসিলিটেশন কমিটি আমরা সক্রিয় করেছি। আমরা যেসব নিশেধাজ্ঞা আরোপ করেছি, সেগুলো আরো বাস্তবসম্মত করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে এয়ারলাইনসগুলোর যে ক্ষতি তা পূরণ করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ আছে কি না তা জানতে চাওয়া হয়। আমরা বলেছি, এ ব্যাপারে আমাদের চিন্তাভাবনা আছে।
এয়ারলাইনসগুলোকে কিভাবে সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি বলে আশ্বস্ত করেছি। যেহেতু আন্তর্জাতিকভাবে এটা স্বীকৃত এবং সব দেশই এয়ারলাইনসগুলোকে সহায়তা করবে, আমরাও একইভাবে করব।