করোনাভাইরাস চিকিৎসায় রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে দুই হাজার চিকিৎসককে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৪ মে) রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সুপারিশের আলোকে তাদের বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের প্রবেশ পদে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুসারে ২২০০০-৫৩০৬০ টাকা বেতনক্রমে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে সাময়িকভাবে নিয়োগ দেওয়া হলো।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সাময়িকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী সার্জনগণকে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হবে। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর সেবা প্রদানকালীন তার কর্মদক্ষতা সন্তোষজনক কিনা, চাকরি স্থায়ীকরণের সময় তা বিবেচনা করা হবে।
আগামী ১২ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক নির্দেশিত বা পদায়িত কার্যালয়ে যোগদানের জন্য প্রার্থীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নির্ধারিত তারিখে চাকরিতে যোগদান না করলে তিনি চাকরিতে যোগদান করতে সম্মত নন বলে ধরে নেয়া হবে এবং সাময়িক নিয়োগ বাতিল বলে গণ্য হবে।
এরআগে গত ৩০ এপ্রিল তাদের সাময়িকভাবে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল পিএসসি। ওই দিন সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে পাঁচ হাজার ৫৪ জনও নিয়োগের সুপারিশ করে কমিশন।
৩৯ তম (বিশেষ) বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পদ স্বল্পতায় ক্যাডার পদ না পাওয়াদের মধ্য হতে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের সহকারী সার্জন পদে দুই হাজার জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এরআগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে পিএসসির কাছে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছিল।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নিয়োগকৃত ব্যক্তি বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা না হলে নিয়োগ বাতিল হবে। বাংলাদেশের নাগরিক নন, এমন কোনো ব্যক্তিকে বিয়ে করলে বা বিয়ে করার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ হলেও নিয়োগ বাতিল হবে।
নিয়োগকৃত প্রার্থীকে লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অথবা সরকারি নির্ধারিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। প্রশিক্ষণ শেষে তাকে তার চাকরি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সরকার যেরুপ স্থির করবে সেরুপ পেশাগত ও বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। তাকে দুই বছর শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজ করতে হবে।
চাকরিতে যোগদানকালে তাকে যোগদানপত্রের সাথে ৩০০ টাকা মূল্যের নন-জুডিশিয়াল স্টাম্পে এই মর্মে একটি বন্ড সম্পাদন করতে হবে যে তিনি নিজের বা পরিবারের অন্যান্য সদস্যের জন্য কোন যৌতুক নিবেন না এবং দিবেন না।
পিএসসি জানায়, ৩৯তম (বিশেষ) বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত নন, এমন আট হাজার ১০৭ জন প্রার্থীর মধ্য হতে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের সহকারী সার্জন পদে নিয়োগের জন্য যথাযথ বিধি-বিধান অনুসরণ করে ২ হাজার জন প্রার্থীকে সাময়িকভাবে সুপারিশ করা হয়।
এই বিসিএসে উত্তীর্ণ এমবিবিএস/সমমানের ডিগ্রিধারী ৮ হাজার ১০৭ জন প্রার্থীর মধ্য হতে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের সহকারী সার্জন পদে সুপারিশ প্রদানের জন্য সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটে নন-ক্যাডার মেডিকেল অফিসার/সহকারী রেজিস্ট্রারের ৫৬৪টি পদে পিএসসির গত ১২ ফেব্রুয়ারির সুপারিশ বাতিল করা হয়েছে।
এসব দপ্তরে ৫৬৪টি নন-ক্যাডার মেডিকেল অফিসার/সহকারী রেজিস্ট্রার পদে এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নতুন চাহিদার ভিত্তিতে ৩৯তম বিসিএসের নন-ক্যাডার পদের জন্য কমিশনে আবেদনকারী প্রার্থীদের মধ্য হতে পরবর্তীতে যথাযথ বিধি বিধান অনুসরণ করে নতুন করে প্রার্থী নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানায় পিএসসি।
৩৯তম বিসিএস থেকে এর আগে ৪ হাজার ৭২১ জন চিকিৎসককে ক্যাডার পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।