জেলা প্রতিনিধি:

শেখ হাসিনার বাংলাদেশ,ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ।ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকারের দেয়া রেশন কার্ড সহ বিভিন্ন ত্রাণ প্রাপ্তির তালিকায় নাম দিতে চাওয়া দুস্থদের নিকট হতে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে, নোয়াখালীর সেনবাগে ৭ নং মোহাম্মদ পুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার এমদাদুল হক মাসুদের বিরুদ্ধে।

টাকা ছাড়া মিলবে রেশন কার্ড।সরকারি ত্রান সুবিধা,বয়স্কভাতা কার্ড,প্রতিবন্ধী কার্ড সহ নানা অজুহাতে অসহায়দের নিকট হতে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে ১ নং ওয়ার্ড ( উত্তর রাজারামপুর) মেম্বার এই এমদাদুল হক মাসুদ।

সরজমিনে গিয়ে ঐ এলাকার ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা যায়,উত্তর রাজারামপুর খাঁনপাড়ার ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক খাঁনের মেয়ে রিনা আক্তার কে ৬ মাস আগে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার জন্য মেম্বার মাসুদ ৫ হাজার টাকা দাবি করে, এবং ১ হাজার টাকা ও আইডি কার্ড এর ফটোকপি নিয়ে যায়। কার্ড নেয়ার সময় বাকী ৪ হাজার টাকা দিতে হবে বলে ও জানান মেম্বার। টাকা নেয়ার ৬ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর ও কার্ড বা টাকা ফেরৎ পাননি বলে জানান ভুক্তভোগীর পিতা রফিক।

একই গ্রামের চালতাতুলি এলাকায়, হারাধন মজুমদারের স্ত্রী সবিতা রানী মজুমদারের কাছে রেশন কার্ড করে দেওয়ার জন্য ৫০০ টাকা চাইলে তিনি তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায়, মেম্বার কার্ড করে দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং সরকারি সকল ত্রান সুবিধা হতে বঞ্চিত করে।

দীলিপ কুমার মজুমদারের স্ত্রী মন্জ্ঞু রানী মজুমদারের নিকট হতে ৪০০ টাকা নেওয়ার পরে ও অধ্যবধি কার্ড এবং সরকারি ত্রান সহায়তা কিছুই পাননি তিনি। একমাত্র প্রতিবন্ধি ছেলেকে নিয়ে কষ্টে দিনযাপনকারী অসহায় মৃত নান্টু লাল ভৌমিকের স্ত্রী জুতিফা রানী জানান, বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়ার জন্য মেম্বার টাকা দাবী করলে, জুতিফা দিতে না পারায় তাকে সরকারি সকল ত্রান সুবিধা হতে বঞ্চিত করেছেন এবং কার্ড ও করে দেননি এই মেম্বার। একই পাড়ার রতন ড্রাইভার এর স্ত্রী হতে ও রেশন কার্ডের খরচ এর জন্য ৪০০ টাকা নেয় স্থানীয় মাসুদ মেম্বার।
ঐ গ্রামের চান্দের পুকুর পাড়ের বেলাল খাঁন হতে ২০০ টাকা, নুরুর নিকট হতে ২০০ টাকা ও হাতিয়ে নেয় অর্থলোভী এই মেম্বার।

তিনপুকুরিয়ার আবদুর রহিমের কাছে ৫০০ টাকা দাবী করা সহ ঐ ওয়ার্ডের অর্ধশত দুস্থ – অসহায়দের কাছে রেশন কার্ড এর খরচ বাবদ ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দাবী করে নিয়ে আসছিলেন এই ইউপি সদস্য। ১ নং ওয়ার্ডের কোন অসহায় নাগরিক টাকা ছাড়া কোন সুযোগ সুবিধা পান এই মেম্বার মাসুদের নিকট হতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ জানান, ইয়াবা সেবনকারী মাদকাসক্ত এই মেম্বার স্থানীয় ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় এবং এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাদের সাথে ভালো সখ্যতা থাকায়, কেউ ভয়ে মুখ খুলে প্রতিবাদ করতে পারে না।
তার অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বললেই দলবল নিয়ে অস্ত্রসস্র সহ বাড়ী ঘরে গিয়ে হুমকি ধমকি সহ শারীরিক নির্যাতন ও করেন।পুরো এলাকার দুস্থ অসহায়রা তার কাছে জিম্মি। এখানে মাসুদ মেম্বার এর শর্ত একটাই, টাকা দিলেই মিলবে নাগরিক সেবা।অন্যথায় নয়।

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উপজেলা মৎসজীবিলীগ সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন খাঁন, মিজান আমিন,খাজা
মিয়া,ফজল হক, মনির, শালিশদার এসলাম হাজারী, তিনপুকুরিয়ার মিলন,ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু,
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
খাজা মিয়া জানান মেম্বারের এহেন কর্মকাণ্ডের কথা আমি মুঠোফোন উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফিরোজ আলম রিগ্যান কে ও জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি জানেন এবং মেম্বারকে সতর্ক করে দিবেন বলে ও আমাকে
মুঠোফোনে জানিয়েছেন।
এব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান জহির হোসেন স্বপন গণমাধ্যম কে জানান, অনেকদিন ধরে লোকমুখে প্রায়ই এধরনের অভিযোগ শুনে আসছি। এটি ন্যাংকার জনক ঘটনা এবং আমাদের জন্য কলংক। তবে ইউনিয়ন পরিষদে যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করে আমরা বিষয়টির সমাধানে চেষ্টা করবো।

স্থানীয় সেবারহাট বাজারের ব্যবসায়ী ও ইউপি চেয়ারম্যান পুত্র জাফর উল্লাহ বলেন, অন্যায়কারী যে হউক আমরা তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করি এবং প্রশাসনের যেকোন ন্যায় বিচার ও সিদ্ধান্ত কে সাধুবাদ জানাই।

এব্যাপারে যোগাযোগ করতে চাইলে, অভিযুক্ত এমদাদুল হক মাসুদ মেম্বারকে
(01827-041646) বারবার ফোন দেওয়ার পরে ও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম মজুমদার গণমাধ্যমকে জানান, আমরা যখনি কোথাও কোন অনিয়মের অভিযোগ পাই, তাৎক্ষণিক সেখানে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ফেলে, সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে অপরাধী যেই হউক, আমরা তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।