করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারীতে বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮ লাখ ছুঁই ছুঁই। আর এ মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৫৭ হাজারে। করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে বর্তমানে ২৯ লাখ ৩৪ হাজার ৫২১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬০৫ জন।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার এর হিসেব অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৪৩২ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ লাখ ৮৯ হাজার ৫৬০ জনে। ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬০৫ জন।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, ১ লাখ ২ হাজার ১০৭ জন মারা গেছে সেখানে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যাও বিশ্বে সর্বোচ্চ ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮০৩ জন।
করোনাভাইরাসের মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩৭ হাজার ৪৬০ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ৬৭ হাজার ২৪০ জন।
মৃত্যুর সংখ্যায় যুক্তরাজ্যের পরেই রয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩৩ হাজার ৭২ জন। আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ৩১ হাজার ১৩৯ জন।
স্পেনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৮ হাজার ৭৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৮৩ হাজার ৮৪৯ জন।
ইউরোপেরই অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৫৯৬ জনের। আর আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৪২ জন।
অন্যদিকে করোনা ভাইরাসজনিত রোগ থেকে চীনের মূল ভূখণ্ডে সেরে উঠেছে ৭৮ হাজার ২৮৮ জন। যুক্তরাষ্ট্রে ৪ লাখ ৯০ হাজার ১৩০, স্পেনে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৯৫৮, ইরানে ১ লাখ ১১ হাজার ১৭৬ জন, ইতালিতে ১ লাখ ৪৭ হাজার ১০১ এবং ফ্রান্সে ৬৬ হাজার ৫৪৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে। ইউরোপের দেশ জার্মানিতে ১ লাখ ৬২ হাজার ৮০০ জন মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এ ছাড়া তুরস্কে ১ লাখ ২২ হাজার ৭৯৩, ব্রাজিলে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৪৭, সুইজারল্যান্ডে ২৮ হাজার ৩০০ জন, কানাডায় ৪৮ হাজার ১৬৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বুধবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৩৮ হাজার ২৯২ জন। তাদের মধ্যে ৫৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৯২৫ জন।
প্রসঙ্গত, চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত চার মাসে বিশ্বের ২১২টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। অধিকাংশ দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে মানুষের চলাফেরার ওপর বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো দেশে আরোপ করা হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, কোথাও কোথাও আংশিকভাবে চলছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ওপর পড়েছেন।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।