দেশে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরো দুই হাজার ৯১১ জনের শরীরে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এর আগে গত ৩১ মে (রোববার) দেশে সর্বোচ্চ ২৫৪৫ জন করোনারোগী শনাক্ত হয়। আজকের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দেশে মহামারী ভাইরাসটিতে সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫২ হাজার ৪৪৫ জন। একই সময়ে দেশে আরো ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড। আগে মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ডটি ৩১ মে-তেই হয়েছিল। সেদিন দেশে সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ পর্যন্ত এ ভাইরাসের সংক্রমণে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়াল ৭০৯।
আজ মঙ্গলবার (২ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
দেশে পিসিআর মেশিনের মাধ্যমে ৫২টি ল্যাবের পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে ১৪ হাজার ৯৫০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৭০৪টি। এ নিয়ে এযাবত মোট নমুনা পরীক্ষা দাঁড়াল ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৭৩টিতে।
তিনি আরো জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরো ৫২৩ জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ১২০ জন।
গেল ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৯১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের বিশ্লেষণ তুলে ধরে নাসিমা সুলতানা বলেন, মৃত ৩৭ জনের মধ্যে ৩৩ পুরুষ এবং চারজন নারী। তাদের বয়স বিশ্লেষণে জানানো হয়, মারা যাওয়াদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের চারজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের একজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে নয়জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের ১০ জন এবং আশি ঊর্ধ্ব রয়েছেন দুজন।
এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের রয়েছেন ১০ জন, চট্টগ্রামের বিভাগের ১৫ জন, সিলেটে চারজন, বরিশালে তিনজন, রাজশাহীতে দুজন, রংপুরে দুজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে একজন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২৮ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন নয়জন।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারীতে পরিণত হয়েছে। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬২ লাখের বেশি। আর মৃতের সংখ্যা তিন লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি। বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজন আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার কথা জানায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। এরপর মার্চ মাস শেষে ৫০ জনের মতো শনাক্তের কথা জানা গেলেও এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আক্রান্তের হার বাড়ে খুব দ্রুত। সম্প্রতি লকডাউন শিথিল করার পর আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা শনাক্তের হার আরো বেড়েছে।