বিশেষ প্রতিনিধি:ফয়সাল আহমেদ
কঠিন ঘটনার রাজ সাক্ষী হয়ে গেল টাঙ্গাইল।টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের বোয়ালীহাটবাড়ী গ্রাম। এই গ্রামে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ছোট একটি গ্রামীণ বাজার। ঘটনার তারিখ ১৩ জুন ২০২০ দিবাগত রাত।
এক পাগলীর প্রসববেদনার গগনবিদারী চিৎকারে ঘুম ভেঙেছিল উপজেলার বোয়ালীহাটবাড়ী গ্রাম ও বাজার এলাকার পাহাড়ি জনপদের সাধারণ মানুষের। তার পরে যে ঘটনা ঘটে তা হলো নির্মম বাস্তবতায় পৃথিবীতে সদ্য জন্ম নেওয়া এক ফুটফুটে মানবশিশুর পরিচয়হীনতার গল্প।
স্থানীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানান, রাতে পাগলীর প্রসববেদনার চিৎকারে প্রথম এগিয়ে আসেন বোয়ালীহাটবাড়ী বাজার এলাকার বয়োবৃদ্ধ এক নৈশপহরী তার আব্দুল্লাহ। প্রসববেদনায় কাতর পাগলীকে নিয়ে যান প্রথমে বাজারসংলগ্ন একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত বারান্দায়। তাকে সেখানে রেখে দ্রুত ছুটে যান গ্রাম্য দাই এর খোঁজে। সন্ধান মেলে গ্রাম্য দাই সাজেদা বেগমের। দাই সাজেদা বেগমকে বিষয়টি বুজিয়ে বলার পর নৈশপ্রহরীর সাথেই রওনা হন সাজেদা
সাজেদা বেগমেকে পেয়ে পাগলী মনোবল ও শক্তি বৃদ্বি পায় এবং সাজেদা বেগমের হাতে ধরেই ভূমিষ্ট হয় এক ফুটফুটে পুত্রসন্তানের। পাগলীটি পুত্রসন্তানের মা হয়েছে ঠিকই কিন্ত পৃথিবীর আলো দেখা এই ফুটফুটে শিশুর বাবা কে এটাই এখন সবার প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে ।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে গতকাল ১৪ জুন বিকালে ঘটনাস্থলে স্ব স্বরীরে গিয়ে নবজাতকের জন্য কিছু প্রসাধনী সামগ্রী, পোশাক, শিশুখাদ্য এবং সন্তান ও মায়ের জন্য ফলমূল ও শাড়ি-কাপড় প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেই ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সহায়তায় নবজাতকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং প্রসবপরবর্তী চিকিৎসা ও ওষুধ নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ।সাজেদা বেগমের আগ্রহের প্রেক্ষিতে নবজাতক ও তার মাকে প্রাথমিক অবস্থায় তার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এখন মা ও নবজাতক উভয়ই সুস্থ আছে। সংগ্রামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান, গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় আগে পাগলীটি উপজেলার চাপড়ি বাজার এলাকায় অবস্থান করছিল।
সন্তান প্রসব করার কিছু দিন আগে সে বোয়ালিহাটবাড়ি বাজার এলাকায় চলে আসে। পাগলীর কথাবার্তা অস্পষ্ট সে তার নাম-পরিচয় কিছুই পরিষ্কারভাবে বলতে পারে না।এর মধ্যে নিঃসন্তান ২০টি পরিবার সন্তানটি পেতে লিখিত আবেদন করেছেন বলে উচ্চকন্ঠকে জানানো হয়েছে ।