করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জয়ী হওয়ার উপায়

অধস্তন আদালতের ১৩ বিচারক এবং ২৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে আরও ৪ জন বিচারক আইসোলেশনে আছেন। এ ছাড়া বর্তমানে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন ১ জন বিচারক।

সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আদালতে বিচারকার্য পরিচালনা এবং দায়িত্ব পালনের সময় সারা দেশে এ পর্যন্ত অধস্তন আদালতের ১৩ জন বিচারক এবং ২৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন আছেন আরও ৪ জন বিচারক।

সর্বপ্রথম নেত্রকোনা জেলা ও দায়রা জজ শাহাজাহান কবির করোনায় আক্রান্ত হন এবং একই দিনে মুন্সীগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রোকেয়া রহমানও আক্রান্ত হন। বর্তমানে তারা দু’জন সুস্থ হয়ে আবার কাজে যোগদান করেছেন।

এ মুহূর্তে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন লালমনিরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফেরদৌস আহমেদ। তাকে প্লাজমা দেয়া হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর বিচারক বেগম শামীম আহমেদ ও ডিপিডিসি-২-এর স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রেজমিন সুলতানা।

অধস্তন আদালতের যে সব বিচারক বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসস্থানে চিকিৎসাধীন আছেন, তারা হলেন- কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কিরণ শংকর হালদার, জয়পুরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রুস্তম আলী, আইন ও বিচার বিভাগের উপ-সচিব এস মোহাম্মদ আলী, কুড়িগ্রামের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. তৈয়ব আলী, নেত্রকোনার সহকারী জজ মো. মেহেদী হাসান, চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দে, চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেহ মোহাম্মদ নোমান এবং নোয়াখালী হাতিয়া চৌকি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নিজাম উদ্দিন।

সুপ্রিম কোর্ট থেকে ২৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর চিকিৎসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা জজদের অনুরোধ করা হয়েছে।

এ দিকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সঙ্গে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

অন্যদিকে অধস্তন আদালতের বিচারকদের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি কমিটি সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে।

এর আগে গত ১৪ জুন করোনায় আক্রান্ত অধস্তন আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মকর্তা-কার্মচারীদের তথ্য চেয়েছিলেন হাইকোর্ট প্রশাসন। হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক স্মারক থেকে এ তথ্য চেয়েছিলেন।

‘করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত অধস্তন আদালতে কর্মরত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তথ্য বিবরণী প্রেরণ প্রসঙ্গে’ শীর্ষক স্মারকে বলা হয়- উপযুক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হলে অধস্তন আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের তথ্য বিবরণী ১ নম্বর ছক মোতাবেক এবং সহায়ক কর্মকর্তা/কর্মচারীদের তথ্য বিবরণী ২ নম্বর ছক মোতাবেক ই-মেইলে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হল। সব জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, সব বিভাগীয় স্পেশাল জজ/স্পেশাল জজসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে এ স্মারকের অনুলিপি পাঠানো হয়। এরপর সারা দেশ থেকে এ তথ্য হাইকোর্টে আসে।