গণপরিবহনে যাত্রীদের জন্য যে জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে তার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যাত্রীরা। নামমাত্র ডেটল, স্যাভলন, গুঁড়া সাবান মিশিয়ে এসব জীবাণুনাশক তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের। যাত্রীরা বলছে, বাসে যাত্রী ওঠানোর সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজারের নামে যে জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিছক রঙিন পানি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নকল সুরক্ষা পণ্যে বাজার সয়লাবের পর এর রেশ গণপরিবহনেও পড়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন রুটে বাসের যাত্রীরা অভিযোগ করেছে, জীবাণুনাশকের নামে গণপরিবহনে যাত্রীদের হাতে যা দেওয়া হচ্ছে তা অত্যন্ত মানহীন, এতে কোনো ঘ্রাণ নেই। নেই কার্যকারিতাও। এগুলো ব্যবহারে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি আরো বাড়ছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর মহাখালী, গুলশান ও বাড্ডা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীদের বাসে তোলার সময় বোতল থেকে বিভিন্ন রঙের পানি হাতে স্প্রে করে দিচ্ছেন বাসের সহকারীরা। আবার বেশির ভাগ সহকারীর হাতে রঙিন পানির এই বোতল দেখা গেলেও অনেকের হাতে তা-ও দেখা যায়নি। অন্যদিকে মাস্ক ছাড়াই অনেক যাত্রীকে গণপরিবহনে চলাচল করতে দেখা গেছে।
রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় অনাবিল পরিবহনের একটি বাসের সহকারী শাহিন আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্যাভলন ও হেক্সিসল দিয়া এই স্যানিটাইজার বানাইছি। পানি বেশি মিক্স করায় গন্ধ পাওন যাইতেছে না। খালি স্যানিটাইজারে মেলা খরচা।’
জীবাণুনাশকের বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্রদূত পরিবহনের সহকারী সেলিম মিয়া বলেন, ‘ডেটলের লগে পানি মিশাইছি। সাথে একটু হেক্সিসল। এহন যাত্রী অনেক কম, তাই ইনকামও কম। সবাইরে স্যানিটাইজার দিতে গেলে তো অনেক টেকার দরকার।’
সাইফুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘বাসে যে ধরনের জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে সেগুলোর কোনো মান নেই। সরকারের পক্ষ থেকে গণপরিবহনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলার কথা বলা হলেও কেউ তা মানছে না। আবার তদারকিও নেই। ঝুঁকি নিয়েই আমরা বাসে চলছি।’
সোহেল রানা নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘এরা (বাসের সহকারীরা)
যে পানি স্প্রে করছে, আমার তো মনে হয় করোনা ধ্বংসের চেয়ে বরং ছড়াচ্ছে। তদারকি না থাকলে এভাবেই চলতে থাকবে। কিন্তু তদারকি করবে কে?’