যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ছাড়ার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা কার্যকর হবে ২০২১ সালের ৬ জুলাই। খবর রয়টার্স।
ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আনুষ্ঠনিক চিঠি হাতে পাওয়ার পর জাতিসংঘের তরফ থেকে মঙ্গলবার (৭ জুলাই) এ কথা জানানো হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, ডব্লিউএইচও ছাড়ার এক বছর আগে নোটিশ দিতে হয় এবং একই সময়ে চাঁদার টাকা পরিশোধ করতে হয়। সেই আনুষ্ঠানিকতা বাস্তবায়ন করে এখন যুক্তরাষ্ট্রের কেবল বেরিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা।
এদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে চীনের সঙ্গে টানাপড়েনের জেরে যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচও’র সঙ্গে ৭০ বছরের সম্পর্কের অবসান ঘটাতে যাচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেসব দেশের টাকায় চলে, তার মধ্যে এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রের চাঁদার পরিমাণই ছিল সবচেয়ে বেশি।
কেবল ২০১৯ সালেই যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচও’র তহবিলে ৪০ কোটি ডলারের বেশি দিয়েছে, যা ডব্লিউএইচও’র মোট বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ।
ডব্লিউএইচও’র ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সেই চাঁদা বাবদ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এখনও ২০ কোটি ডলারের বেশি পাওনা রয়েছে সংস্থাটির।
অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্যের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থাটির বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, চীনে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর সংস্থাটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ‘তথ্য গোপন’ করেছিল।
এছাড়াও, ডব্লিউএইচওকে ‘চীন ঘেঁষা’ আখ্যায়িত করে এই বিশ্ব সংস্থাকে জবাবদিহিতায় আনারও দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।
তবে, ট্রাম্পের অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহা পরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইসাস বলেছিলেন, প্রতিটি দেশের সঙ্গেই তারা সমান গুরুত্ব সহকারে কাজ করেন। পক্ষপাতের কোনো সুযোগ নেই।
পাশাপাশি, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস বলেছিলেন, এখন ডব্লিউএইচও-র তহবিল বন্ধের সময় নয়। এই সংকট মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারীতে সংক্রমণ আর মৃত্যু দুদিক দিয়েই সবার চেয়ে এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে ৩০ লাখের বেশি মানুষের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার। বিশ্বে ১ কোটি ১৭ লাখ শনাক্ত রোগীর এক চতুর্থাংশই যুক্তরাষ্ট্রের।