সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুর পয়েন্টে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। দুটি পয়েন্টেই বিপদসীমা অতিক্রম করেছে যমুনার পানি। ফলে আবারও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রায় সোয়া লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বুধবার সকালের দিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৪ দশমিক ৩ মিটার রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপরে। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৩ সেন্টিমিটার। অপরদিকে কাজিপুর পয়েন্টে রেকর্ড করা হয়েছে ১৬.১৯ মিটার, যা বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ওপরে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, দ্বিতীয় দফায় যমুনার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় জেলার সদর, কাজিপুর, শাহজাদপুর, বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলার আভ্যন্তরীণ নদ নদী ও শাখাগুলোতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা যমুনায় পানি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
পানি বাড়ার কারণে আতঙ্কের মধ্যে পড়েছে নদী তীরের অসহায় মানুষজন। অনেকেই আশেপাশের বাঁধে ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় যমুনার অভ্যন্তরীণ চারঞ্চলের মানুষেরা দ্বিতীয় দফায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে বাড়ি-ঘর, শিক্ষা ও ধর্মী প্রতিষ্ঠানসহ ফসলি জমি।
অস্বাভাবিক হারে পানি বাড়ায় এসব এলাকার মানুষের মধ্যে ভয়াবহ বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে। জেলায় মোট ১৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও এখন পর্যন্ত সেখানে কেউ অবস্থান করেনি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, জেলার ৫টি উপজেলার যমুনা নদী অধ্যুষিত ৩৫টি ইউনিয়নে ২৫ হাজার পরিবারের প্রায় সোয়া লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ২৮০টি ঘর-বাড়ি। ২২টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তা ও বাঁধ।
তিনি আরও বলেন, প্রথম দফা বন্যাকবলিতদের জন্য ১২৫ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় দফাতেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি।