গত ৩১ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের গাড়িতে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সহপাঠিরা। এতে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। পুলিশের লাঠির আঘাতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহতের খবর পাওয়া গেছে। বামনা থানার ওসির বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ করেছেন আহত ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। 

আজ বেলা ১২টার দিকে সিফাতের নিজ বাড়ি বরগুনার বামনা উপজেলায় সিফাতের মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন শুরু করে তার সহপাঠিরা। এ সময় পুলিশ এসে প্রথমে মানববন্ধনের ব্যানার ও মাইক ছিনিয়ে নেয়। পরে লাঠিচার্জ করে মানববন্ধন পণ্ড করে দেন পুলিশ।

জানা যায়, সিফাতের বন্ধুরা মানববন্ধন চালিয়ে গেলে বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস আলী তালুকদার ছুটে এসে শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা শুরু করে। এতে ৪ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। আহতরা হলেন- মো. রুবেল, ইমরান, রায়হান ও মিথুন।

মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী পুলিশের লাঠিচার্জে আহত মো. রুবেল বলেন, আমরা আমাদের বন্ধুর মুক্তির জন্য মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি। আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করছিলাম। এর আগে আমরা মানববন্ধনের জন্য পুলিশকে জানালে তারা আমাদের মানববনন্ধন করতে দেয়নি। সারা বামনাতে টহল বসিয়ে আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়েছে। আজ যখন শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন শুরু করেছি তখন প্রথমে পুলিশ এসে আমাদের ব্যানার নিয়ে যায়। পরে ওসি ইলিয়াস এসে ওসি প্রদীপের চেয়েও ভয়ংকর রূপ ধারন করে আমাদের উপর লাঠিচার্জ করেন।

শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, পুলিশ এভাবে জঘন্যতমভাবে গালিগালাজ ও অহেতুক লাঠিচার্জ করতে পারে আমরা জীবনে প্রথম দেখেছি। ওসি মানববন্ধনে থাকা শিক্ষার্থী ও সিফাতের নানা এনায়েত কবির হাওলাদারকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করেছে যেটা মোটেও কাম্য নয়।

সিফাতের নানা এনায়েত কবির হাওলাদার বলেন, পুলিশের আজকের ভূমিকা খুবই দুঃখজনক। আমি এখন আমার নাতিকে নিয়ে সংশয়ে আছি।


 
এ ব্যপারে বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস আলী তালুকদার বলেন, আমাদের অনুমতি না নিয়ে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করতেছে এমন সংবাদ পেয়ে আমি মানববন্ধনটি বন্ধ করে দেই।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাত ৯টায় টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে এক পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। পরে পুলিশ সিনহার সফরসঙ্গী সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে মাদক ও পুলিশের দিকে অস্ত্র তাক করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।