জনপ্রিয় সোশ্যাল সাইট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ধরনের গুজব-উস্কানি ঠেকাতে এর আগে অনেকবার প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে দেন-দরবার করেছে বাংলাদেশ সরকার। এবার বিষয়টি আরও সহজ করতে বাংলাদেশি কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে ফেসবুক। নব নিযুক্ত এই কর্মকর্তার নাম সাবহানাজ রশীদ। তিনি ফেসবুকের বাংলাদেশ অংশ নিয়ে কাজ করবেন।

আজ সোমবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার ফেসবুকের আঞ্চলিক সদর দপ্তর সিঙ্গাপুরের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাবহানাজ রশীদ দিয়া। দিয়া বাংলাভাষী এবং বাংলাদেশ বিষয়ক যেকোনো বিষয়ে তিনি দ্রুত সাড়া দিতে পারবেন। এতে দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে মন্ত্রীকে ফেসবুকের সিঙ্গাপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করেছেন। ওই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ফেসবুকের হেড অব সেফটি বিক্রম সেনগ, ফেসবুক পাবলিক পলিসি বিষয়ক পরিচালক অশ্বিনী রানা এবং ফেসবুক মোবাইল পার্টনার বিভাগের ইরাম ইকবাল।

মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফেসবুককে বাংলাদেশের আইন ও বিধিবিধান মনে চলা ছাড়াও দেশ ও দেশের বাহির থেকে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও সম্মান বিঘ্নিতকর মিথ্যা ও গুজব বা অপপ্রচারমূলক উপাত্ত প্রচার ছাড়াও সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, পর্নোগ্রাফি ও বাংলাদেশের সামাজিক- সাংস্কৃতিক মূল্যবোধবিরোধী উপাত্ত প্রচার না করতে আহ্বান জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার । তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সকল প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান মেনে চলা ফেসবুকের দায়িত্ব। রিসেলার নিয়োগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে কর প্রদানে প্রতিনিধি নিয়োগ এবং বাংলা ভাষার সঠিক অনুবাদ ও প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর মন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ, আমাদের সমাজ আমাদের নাগরিকদের ফেসবুকের নিরাপদ ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে। মন্ত্রী বাংলাদেশের আইন, আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি, মূল্যবোধ এবং নিয়মনীতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে আইন আছে, সেই আইন মোতাবেক ফেসবুককে কনটেন্ট এবং অন্যান্য বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখার বিষয়ে মন্ত্রীকে আশ্বাস প্রদান করেন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮, কর ও ভ্যাট বিষয়ক আইন মেনে চলার আশ্বাসও প্রদান করেন।

প্রায় ৩ ঘণ্টা ব্যাপী এই বৈঠকে মোস্তাফা জব্বার বাংলাদেশে নৈরাজ্য পর্নোগ্রাফি, সন্ত্রাস, গুজব রটানো,পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, অপপ্রচার ও সামাজিক নিরাপত্তাসহ, বিদ্যমান বিভিন্ন বিষয়ে ফেসবুককে বাংলাদেশের নিয়ম-নীতি মেনে নিরাপদ ফেসবুক ব্যবহারের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। বৈঠকে জানানো হয়, ফেসবুক বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে প্রতি মাসে অন্তত একটি করে বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশে তাদের স্বচ্ছ কার্যক্রম বাস্তবায়নে কাজ করবে।