আসামি সাহেদের আচরণ আমাকে অবাক করেছে। নিজের গাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার হলেও আদালতে বার বার সাহেদ গাড়িটি নিজের নয় বলে দাবি করেছিল। পরে গাড়ির মালিকানা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রেশনের নথি সামনে আসতেই সে স্বীকার করলে। সাহেদ একজন চতুর অপরাধী। আমাদের এই সমাজে সাহেদের মতো ভদ্রবেশে অনেক ধুরন্ধর লোক রয়েছে, যাদের জন্য এই মামলার রায় একটি বার্তা হিসেবে কাজ করবে।
আজ সোমবার রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার রায় পড়ার শুরুতেই আদালত এসব মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, এ রায় দিতে যাচ্ছি তা সমাজের অন্য যারা ভদ্রবেশী প্রতারক আছে, তাদেন জন্য দৃষ্টান্ত হবে। এরপরপরই বিচারক বিদেশি পিস্তল রাখায় অস্ত্র আইনের ১৯ এর ‘ক’ ধারা অনুযায়ী সবোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে এ আইনের ‘চ’ ধারা অনুযায়ী গুলি রাখার দায়ে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন সাহেদকে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, সাহেদ ২০ লাখ টাকা লোন নিয়ে গাড়িটি ক্রয় করেন। কিন্তু তিনি আদালতের কাছে স্বীকার করেননি। সাহেদ আদালতের কাছে মিথ্যা তথ্য দেন। তিনি অত্যন্ত চালাক ও ধুরন্ধর ব্যক্তি। গাড়িতে অস্ত্র রাখার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের কাছে তিনি কোনো অনুকম্পা পেতে পারেন না।
রায় শোনার পরপরই অনেকটাই ভেঙে পড়েন কাঠগড়ায় থাকা সাহেদ। তাকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।
অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায় সাহেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক, যা এ আইনের সর্বোচ্চ সাজা। পাশাপাশি আরেকটি ধারায় সাহেদকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে রায়ে। তবে দুই ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে তার ক্ষেত্রে যাবজ্জীবনই প্রযোজ্য হবে।
গত ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করার পর তাকে রিমান্ডে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ। রিমান্ডের মধ্যেই ১৮ জুলাই রাতে তাকে নিয়ে উত্তরায় অভিযান চালিয়ে তার একটি গাড়ি থেকে গুলিসহ একটি পিস্তল এবং কিছু মাদক জব্দ করা হয়।