গত পহেলা এপ্রিল থেকে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম ২৫ শতাংশ হারে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। স্থানীয় সরকার সচিব, আইন সচিব, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ছয়জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
রুলে পানি সরবরাহ ও পয়োঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন, ১৯৯৬ এর ২২(৩) ধারাটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং এই ধারার ক্ষমতাবলে অনুযায়ী পানির দাম বাড়িয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের জারি করা আদেশ কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদের করা এক রিট আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। রিট আবেদনকারী নিজেই শুনানি করেন।
পানির দাম বাড়িয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আদেশ জারি করা হয়। যা গত ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। সেবার মান না বাড়িয়ে ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে গত ১৫ জুন রিট আবেদন করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ। এই রিট আবেদনে ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ২২ জুন এক আদেশে আগামী ১০ আগষ্ট পর্যন্ত বর্ধিত হারে পানির বিল আদায়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন।
হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে ওইদিন বিকেলেই আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করে ওয়াসা। ওয়াসার এ আবেদনের ওপর গত ৩০ জুন শুনানি শেষে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান। এ অবস্থায় আজ আবার রিট আবেদনটি হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়। আদালত শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন।
রিট আবদেনে বলা হয়, গত ২৬ ফ্রেবুয়ারি এক আদেশে ঢাকা ওয়াসা আবাসিক গ্রাহকদের পানির বিল ২৫ শতাংশ এবং বাণিজ্যিক গ্রাহকের বিল বাড়ানো হয়েছে প্রায় ৮ শতাংশ। যা গত ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর করা হয়েছে। নতুন মূল্যহার অনুযায়ী আবাসিকের ক্ষেত্রে প্রতি হাজার লিটার পানির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ টাকা ৪৬ পয়সা, যা আগে ছিল ১১ টাকা ৫৭ পয়সা। আর বাণিজ্যিকে প্রতি হাজার লিটার ৩৭ টাকা ৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরআগে গতবছর সেপ্টেম্বরে পানির মূল্য ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল।
আইনের ২২(২) ধারায় বলা আছে, প্রতিবছর একবার অনধিক ৫ শতাংশ হারে পানির দাম বাড়ানো যাবে। আইন অনুযায়ী পানির দাম নির্ধারণের ৩০ দিন আগে তা জনগণের কাছে প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু পানির দাম বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি ওয়াসার নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়, যেখানে কোনো তারিখ নেই। তাই এভাবে দফায় দফায় পানির দাম বাড়ানো অযৌক্তিক ও বেআইনী।