নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আজ রবিবার (২৫ অক্টোবর) আয়োজিত মানববন্ধনে এ আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক হয়েছে। এভাবে আর চলতে পারে না। আমরা পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই- অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, অবিলম্বে জনগণের চোখের ভাষা পড়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যাথায় জনগণের উত্তাল ঢেউ সৃষ্টি হবে, সেই ঢেউয়ে আপনারা সবাই ভেসে যাবেন।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘জনগণের উদ্দেশেও বলতে চাই, আপনারা আর নিশ্চুপ হয়ে থাকবেন না। যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে আজকে যদি আমরা প্রতিবাদ না করি, রুখে না দাঁড়াই তাহলে ১৯৭১ সালে আমরা যে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, আমরা যে ১৯৯০ সালে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছিলাম, যে গণতন্ত্রকে আমরা ছিনিয়ে নিয়ে আসছিলাম সেই গণতন্ত্রকে তারা আবার হরণ করেছে। সুতরাং আমাদের সবাইকে আজকে রুখে দাঁড়াতে হবে, অধিকারকে ফিরিয়ে আনতে হবে, আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সরকার ‘বিশেষ বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে’ দেশে এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র বিশ্বাস করেই না। শুধুমাত্র জনগণকে বোকা বানানোর জন্য তাঁরা গণতন্ত্রের মুখোশ পড়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রকৃতপক্ষে একব্যক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক বলেছি, আমরা মানববন্ধন, মিছিল, হরতাল বহুত কিছু করেছি। আমরা এখন পর্যন্ত এই সরকারের টনক নড়াতে পারিনি। কারণ তারা বিশেষ বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আছে।’ ‘দানবীয়-হাইব্রিড-স্বৈরাচারী-পুতুল সরকারের’ বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষ জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির আহ্বানও জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ভিন্নমতকে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য তারা (সরকার) আজকে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষ যারা ভিন্ন পোষণ করে লেখালেখি করে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো কথা বলে তখনই তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। যে মামলাতে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী সাহেবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে একটা মিথ্যা অপবাদ, একটা অপব্যাখ্যা এবং সেইসঙ্গে আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে বিনা জামিনে আটকে রাখা হয়েছে।’
অবিলম্বে রুহুল আমিন গাজী, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদের মুক্তি এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান ফখরুল।
সংগঠনের নেতা সাংবাদিক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন ছড়াকার আবু সালেহ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক আবদুল করীম, প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের রফিকুল ইসলাম, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা বেগম, জাসাসের রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।