বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার হুমকি দেওয়ায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা ও হেফাজতে ইসলামীর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী মামলা করার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদ। আজ রবিবার বিকেলে এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানান ওই আইনজীবী।
দেশের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করতে হলে আইন অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয়। আইনের এই বাধ্যবাধকতার কারণে আবেদন করা হয়েছে বলে জানান ওই আইনজীবী।
আবেদনে বলা হয়, ‘১৩ নভেম্বর খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মামুনুল হক ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য তৈরীর তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, ভাস্কর্য নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে সরে না দাঁড়ালে তিনি আরেকটি শাপলা চত্বরের ঘটনা ঘটাবেন এবং ওই ভাস্কর্য ছুঁড়ে ফেলবেন।‘
অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক মাহফিলে “কোনো ভাস্কর্য তৈরি হলে তা টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দেওয়া হবে” বলে হুমকি দিয়েছেন। তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য গত কয়েকদিন যাবৎ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়ে আসছে। তাদের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের রেশ ধরে গত ৪ ডিসেম্বর রাতের তাদের অনুসারীরা কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে।
আবেদনে বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের অপর নাম। সংবিধান স্বীকৃত মতে জাতির জনক। তাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর আঘাত বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল। মাওলানা মামুনুল হক ও জুনায়েদ বাবুনগরীর প্রত্যক্ষ মদদে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হেনেছে দুর্বৃত্তরা। যা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অপমানজনক, অগ্রহণযোগ্য এবং তাদের এইরূপ ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং কার্যকলাপ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বিরাগ ও ঘৃণা সৃষ্টির অশুভ অভিপ্রায়ে করা হয়েছে বিধায় মাওলানা মামুনুল হক গংরা দণ্ডবিধির ১২৩ক/১২৪ক/৫০৫ ধারার আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।’