মাহফুজ বাবু
কুমিল্লা নিমসার পাইকারী কাঁচা বাজর দেশের অন্যতম বৃহৎ কাঁচাবাজার হিসেবে প্রসিদ্ধ। দেশের লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দু’পাশের প্রায় দের কিলোমিটারের বিশাল এলাকা জুড়ে বাজারটির অবস্থান। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে নানা প্রকারের শাক-সব্জি ফলমুল এখানে নিয়ে আসে পাইকার ব্যাপারীসহ আশেপাশের এলাকার কৃষকরা। ২৪ ঘন্টা চালু থাকলেও রাত বাড়ার সাথে সাথেই মুলত বাজারের ব্যস্ততা বাড়ে পণ্য কেনাবেচায়। এখান থেকে ক্রয় করে জেলাসহ বিভিন্নস্থানে নিয়ে যায় খুচরা বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীরা। ব্যস্ততম এই বাজারটিতে কোন নির্দিষ্ট ময়লা আবর্জনার স্থান না থাকায় প্রতিদিনই বাজারের তরকারীর উচ্ছিষ্ট অংশ মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে। আর এসব পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারপাশে। ফলে যাত্রী চলাচলকারী পথচারীসহ বাজারে আসা ব্যবসায়ীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের নিমসার এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দু’পাশসহ রোড ডিভাইডারের মাঝেও চলে পাইকারি কেনাবেচা। ছাড়াও বিশাল এ বাজারে মাঝেই রয়েছে সরকারি বেসরকারি একাধিক স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ব্যাংক এনজিও সহ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিনই রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, যশোর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, চাঁদপুর, নোয়াখালীসহ কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাইকারসহ কৃষকরা নানাজাতের তরিতরকারি, শাক-সব্জি, মৌসুমী ফল ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিক-আপসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে এই বাজারে নিয়ে আসেন। বাজারটিতে মুলত রাত বাড়ার সাথে সাথে ব্যস্ততা বেড়ে দিলের আলোতে কর্মব্যস্ততা কমে আসে এখানে। বিভিন্নস্থান থেকে আসা পণ্যসামগ্রী আড়ৎগুলোতে আনার পর আবার সেই মালালামগুলো অন্য পাইকাররা কিনে নিয়ে যাচ্ছে পররর্তিতে অন্য কোন জেলা ও কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার হাট বাজারে। অভিযোগ রয়েছে মহাসড়কের উপর অসংখ্য ট্রাক , কাভার্ডভ্যান গাড়িতে রেখেই মালামাল বিক্রি করায় প্রতিদিন গভীর রাত থেকে সকাল ৮/৯ টা পর্যন্ত নিমসার বাজারের চারলেনের উভয় অংশে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়। এসময় ব্যস্ততম, মহাসড়কে চলাচলরত দ্রুতগতির যানবাহন চালকদের দুর্ঘটনা এড়াতে গতি কমিয়ে বাজারটি পারাপার হতে দেখা যায়। এছাড়াও রোড ডিভাইডারে অনেক বিক্রেতা মালামাল বিক্রি করায় দুর্ঘটনার আশংকাও থাকে। তবে সবচেয়ে দুর্ভোগ বাজারের অবিক্রিত পঁচে, গলে যাওয়া পণ্য ও তরকারী উচ্ছিষ্ট বাজারে নির্দিষ্ট কোন আবর্জনা ফেলার জায়গা না থাকায় বিক্রেতারা মহাসড়কের পাশেই ফেলে দিচ্ছে এসব পঁচা বাসী পণ্য । আর এভাবেই মহাসড়কের পাশে জমছে আবর্জনার স্তুপ। এতে করে প্রতিদিনই নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। পাশাপাশি মহাসড়কের পাশ দিয়ে চলাচলরত পথচারী,ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে মহাসড়কের পাশে ফুটপাতে এসব উচ্ছিষ্ট ফেলায় পথচারীরা বাধ্য হয়ে সড়কের উপর দিয়ে চলাচল করায় প্রায়ই দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে এ এলাকায়। স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এতদিন বাজারটি সরকার একক ভাবে ইজারা দিলেও সম্প্রতি সরকারী নির্দিষ্ট বাজারের স্থানের বাইরেও দু’টি গ্রুপ ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থানে পৃথক দুটি বাজার পরিচালনা করছে। এতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে বাজারের অবস্থান। আর এজন্য একাধিকস্থানে আবর্জনার স্তুপ জমছে। এছাড়াও তারা আরো বলেন, বাজারে নির্দিষ্ট কোন স্থানে ময়লা ফেলার কোন স্থান নেই তাই বাধ্য হয়ে মহাসড়কেই আবর্জনা ফেলা হয়। অথচ প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হয় বাজারটিতে। এবং প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকা ইজারা পাচ্ছে সরকার। তাই পরিবেশ দুষণ রক্ষায় কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তারা।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, বাজারের ইজারাদারকে চিঠি দিয়েছি,এছাড়াও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে মামলা দায়েরের সুপারিশ চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছি।