মিয়ানমারে জারি জরুরি অবস্থা নিয়ে অবশেষে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সেইসঙ্গে দেশটির নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে অবিলম্বে মুক্তির দাবি করেছে সংস্থাটি। গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সংস্থাটির নিজস্ব সংবাদমাধ্যম ‘ইউএন নিউজে’ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। তবে মিয়ানমারের অভ্যুত্থান নিয়ে নিন্দা জানায়নি নিরাপত্তা পরিষদ।
এর একদিন আগে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দিতে জাতিসংঘকে বাধা দেয় মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু চীন। পরে এ বিষয়ে চীন তার অবস্থান পরিবর্তন করলে সর্বসম্মত বিবৃতি দেয় জাতিসংঘের ১৫ সদস্যরাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই পরিষদ। সর্বসম্মত বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখার পাশাপাশি সহিংসতা থেকে বিরত থাকা এবং মানবাধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনকে পুরোপুরি সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদের দেওয়া ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সংস্থাটি মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছা ও স্বার্থ অনুযায়ী সংলাপ এবং নিজেদের মধ্যে বিবদমান সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর ব্যাপারে উৎসাহিত করছে।
এনিয়ে চীনের জাতিসঙ্ঘ মিশনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বেইজিং আশা করছে যে নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতির মূল বার্তাগুলো সকল পক্ষই মেনে চলবে এবং এটি একটি ইতিবাচক ফলাফলের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারের বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে চীন আশা করছে যে, মিয়ানমারের বিবদমান সব পক্ষই জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে। সংবিধানিক ও আইনি কাঠামোর মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করে যাবে।
মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের একদিন পর গত মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকে বসেছিল। কিন্তু চীনের ভেটোর কারণে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়। তবে আবার বৈঠক করে সামরিক জান্তা সরকারের হাতে বন্দি সু চিসহ অন্যান্যদের মুক্তির আহ্বান জানানোর ব্যাপারে একমত হয়ে বিবৃতি দিল সংস্থাটি।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বরের নির্বাচন নিয়ে কারচুপির অভিযোগ তুলে গত সোমবার মিয়ানমারের সেনারা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতার দখল নেয়। আটক করে ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) নেত্রী সু চি এবং প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্টসহ বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতাকে।
সূত্র : রয়টার্স, ইউএন নিউজ।