আইপিএলে রানের পাহাড় গড়েও জয়ের মুখ দেখল না চেন্নাই সুপার কিংস। কায়রন পোলার্ডের ব্যাটিং তাণ্ডবে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ২১৯ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করে চার উইকেটের জয়ের রেকর্ড গড়ল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ায় এটা দ্বিতীয় জয়। এর আগে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ২২৪ রানের বিশাল টার্গেট তাড়ায় জয় পেয়েছে রাজস্থান রয়েলস।
শনিবার প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২১৮ রান সংগ্রহ করে চেন্নাই। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রানের। লুঙ্গি এনগিডির করা প্রথম বলে কোনো রান নিতে পারেননি পোলার্ড। কিন্তু এক বল পরই করলেন নো-বল। বাড়তি একটি রানের সঙ্গে চারও মিলে যায় মুম্বাইয়ের। হারটা যেন তখন নির্ধারণ হয়ে যায়। তবে রোমাঞ্চ অপেক্ষা করছিল শেষ বল পর্যন্ত। দুই রান নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন পোলার্ড।
অথচ ম্যাচটি আগেই নিজেদের হাতে নিয়ে এসেছিলেন পোলার্ড। তবে সেখান থেকে চেন্নাইকে ম্যাচে ফেরান স্যাম কারান। ১৭তম ওভারে বল করতে এসে দেন মাত্র ২ রান। আর ১৯তম ওভারে ফের বল করতে এসে ১৫ রান দিলেও পান দুটি উইকেট। কিন্তু দু প্লেসির ম্যাচ মিসই ভারি পড়ে যায় দলটির জন্য।
লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য দারুণ সূচনা করে মুম্বাই। কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে অধিনায়ক রোহিত শর্মার ওপেনিং জুটিতে আসে ৭২ রান। এরপর ১০ রানের ব্যবধানে এ দুই সেট ব্যাটসম্যানসহ সূর্যকুমার যাদবকে হারিয়ে উল্টো চাপে পড়ে যায় দলটি। এরপর ক্রুনাল পান্ডিয়ার সঙ্গে পোলার্ডের ৮৯ রানের জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দলটি। এরপর ক্রুনাল আউট হলেও জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন পোলার্ড।
রীতিমতো ঝড় তুলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৭ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন পোলার্ড। মাত্র ৩৪ বলের ইনিংসটি সাজাতে ৬টি চার ও ৮টি ছক্কা মারেন এ ক্যারিবিয়ান। ২৩ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ক্রুনালের ব্যাট থেকে আসে কার্যকরী ৩২ রান। ডি কক ৩৮ ও রোহিত ৩৫ রান করেন। শেষ দিকে ৭ বলে ১৬ রানের ছোট একটি ক্যামিও খেলেন হার্দিক পান্ডিয়া।
চেন্নাইর পক্ষে ৩৪ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান কারান।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি চেন্নাই। দলীয় ৪ রানেই ভাঙে ওপেনিং জুটি। তবে দ্বিতীয় উইকেটে মইন আলীর সঙ্গে ফাফ দু প্লেসির ১০৮ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় দলটি। যদিও এরপর ৪ রানের ব্যবধানে এ দুই সেট ব্যাটসম্যানসহ সুরেশ রায়নাকে হারায় তারা। তবে পঞ্চম উইকেটে রবিন্দ্র জাদেজার সঙ্গে আম্বাতি রাইডুর অবিচ্ছিন্ন ১০২ রানের জুটিতে বিশাল লক্ষ্যই দ্বার করায় চেন্নাই।
ব্যাট হাতে এদিন রীতিমতো ঝড় তুলেছেন রাইডু। মাত্র ২৭ বলে খেলেছেন ৭২ রানের ইনিংস। এ রান করতে ৪টি চার ও ৭টি ছক্কা মেরেছেন এ ব্যাটসম্যান। ৫৮ রান আসে মইনের ব্যাট থেকে। ৩৬ বলে সমান ৫টি করে চার ও ছক্কায় এ রান করেন এ ইংলিশ ব্যাটসম্যান। ২৮ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫০ রানের ইনিংস খেলেন প্রোটিয়া তারকা দু প্লেসি।
২ ওভার বল করে ১২ রানের খরচায় ২টি উইকেট নিয়েছেন কাইরন পোলার্ড। আইপিএল ক্যারিয়ারে নিজের সবচেয়ে বাজে বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েন জাসপ্রিত বুমরাহ। ৫৬ রান খরচ করে পেয়েছেন ১টি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চেন্নাই সুপার কিংস : ২১৮/৪ (ফাফ ডু প্লেসিস ৫০, মঈন আলী ৫৮, আম্বাতি রাইডু ৭২*, রাবিন্দ্র জাদেজা ২২* কাইরন পোলার্ড ২/১২, ট্রেন্ট বোল্ট ১/৪২, জাসপ্রিত বুমরাহ ১/৫৬)।
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস : ২১৯/৬ (রোহিত শর্মা ৩৫, কুইন্টন ডি কক ৩৮, ক্রুনাল পান্ডিয়া ৩২, কাইরন পোলার্ড ৮৭*, হার্দিক পান্ডিয়া ১৬, স্যাম কারান ৩/৩৪, মঈন আলী ১/১)।