প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে জিজ্ঞাসবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সরকারি নথি চুরির অভিযোগে ‘অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্টে’ হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক আরিফুর রহমান সরদার রিমান্ডের এ আবেদন করেন।
মামলার এজহারে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে ৬২ পৃষ্ঠার সরকারি নথি সরানোর অভিযোগ করা হয়েছে। জব্দ তালিকায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষ থেকে চুরি হওয়া ৬২ পৃষ্ঠার নথি উদ্ধার দেখানো হয়েছে।
এছাড়া জব্দ তালিকায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন সেট (যার একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি জি এস টোয়েন্টি আলট্রা লাইট, আরেকটি আইফোন সেভেন প্লাস) ও দুটি পিআইডি কার্ড জব্দমূলে উদ্ধার দেখিয়ে মঙ্গলবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নথি নিয়ে রমনা জোনের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি পুলিশের দেখার বিষয় না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যারা দিয়েছেন, তাদের বিষয়। তারা সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে, মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছে, পরে আবার তাদের জিম্মায় নিয়ে গেছে উদ্ধার হওয়া নথিগুলো। আদালত চাইলে তারা আবার দিতে বাধ্য থাকবেন।’
৬২ পাতার নথি কী বিষয়ক জানতে চাইলে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এটা পড়ে দেখিনি। এটা আমরা বুঝবও না। আসলেই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার মতো তথ্য আছে কি না, সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন।’
উল্লেখ্য, সোমবার (১৭ মে) পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে ৫ ঘণ্টার বেশি সময় তাকে আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ৯টার দিকে তাকে সচিবালয় থেকে শাহবাগ থানায় আনা হয়।
রাতে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব ডা. শিব্বির আহমেদ উসমানী এ মামলা দায়ের করেন। সাংবাদিক রোজিনার বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া মোবাইল ফোনে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথির ছবি তোলা এবং আরও কিছু নথি লুকিয়ে রাখার অভিযোগ এনেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।