হাবিবা রহমান উজরা
শাওয়াল মাসের ছয় রোজাকে ইসলাম বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। পূর্বসূরি আলেমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে রমজান মাসের রোজা পালন করতেন। শরিয়তের দৃষ্টিতে শাওয়াল মাসে ছয় রোজা রাখা মুস্তাহাব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর তার সঙ্গে সঙ্গে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন পূর্ণ বছরই রোজা রাখল।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৬৪)
এক বছরের সমান হয় যেভাবে : রাসুলুল্লাহ (সা.) এক বছরের সমান হওয়ার বিষয়টিও ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এই হলো এক বছরের রোজা।’ (সুনানে নাসায়ি : ২/১৬২)।
মুহাদ্দিসরা বিষয়টি আরো ব্যাখ্যা করে বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেন ‘কেউ কোনো ভালো কাজ করলে সে তার ১০ গুণ সওয়াব পাবে এবং কেউ কোনো অসৎকাজ করলে তাকে শুধু তারই প্রতিদান দেওয়া হবে।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১৬)
এই হিসাবে রমজানের ৩০ রোজায় ৩০০ রোজার সওয়াব হয়। আর শাওয়ালের ছয় রোজায় ৬০ রোজার সওয়াব হয়। এভাবে রমজানের ৩০ রোজা ও শাওয়ালের ছয় রোজা মোট ৩৬০ রোজার সমপরিমাণ হয়।
শাওয়ালের রোজা যেভাবে রাখতে হয় : শাওয়াল মাসের যেকোনো সময় এই রোজা আদায় করা যায়। ধারাবাহিকভাবে বা বিরতি দিয়েও আদায় করা যায়। শাওয়াল মাসে শুরু করে শাওয়াল মাসে শেষ করাটাই আসল কথা। তবে ঈদুল ফিতরের দিনে রোজা রাখা যাবে না। এরপর শাওয়ালের প্রথম দিকে একসঙ্গে ছয়টি রোজা রাখাই উত্তম। যাদের রমজানের রোজার কাজা আছে, তারা আগে রমজানের রোজার কাজা আদায় করবে।
অতঃপর সম্ভব হলে শাওয়ালের রোজা আদায় করবে। রমজানের কাজা রোজা আদায় করতে করতে শাওয়াল মাস শেষ হয়ে গেলে অন্য মাসে শাওয়ালের রোজার নিয়ত করে রোজা রাখবে। আশা করা যায়, আল্লাহ তাকে সওয়াব থেকে বঞ্চিত করবেন না। শাওয়ালের রোজা পুরুষ, মহিলা, যুবক, বৃদ্ধসহ সবাই রাখতে পারে। সবার উচিত এই মর্যাদাপূর্ণ আমলে শরিক হওয়া। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।