ইভ্যালি বলছে , পেমেন্ট নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে এখন তাদের ব্যবসার ডিজাইনে পরিবর্তন আনতে হবে।

বাংলাদেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিরুদ্ধে আসা বিভিন্ন অভিযোগের জবাব দিতে প্রতিষ্ঠানটিকে ‘কারণ দর্শানোর সুযোগ’ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

মি. ঘোষ বলেন, “গ্রাহকদের কাছ থেকে তারা যেই টাকা নিয়েছে, তা তারা কীভাবে ফেরত দেবে সেই বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হবে।”

রবিবার বিকেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সচিব তপন কান্তি ঘোষ আরও জানান, “শুধু ইভ্যালি নয়, সার্বিকভাবে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে, সেবিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বৈঠকে।”

বৈঠকে আরও যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

বাংলাদেশের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর বিরুদ্ধে আসা গ্রাহকদের অভিযোগ কীভাবে যাচাই করা হবে এবং সেই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে দায়বদ্ধ করা সম্ভব – মূলত সেই বিষয়ে রবিবার বিকেলের বৈঠকে আলোচনা করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, “দেশের সব ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর বিরুদ্ধে ভোক্তারা যেসব অভিযোগ করেন, সেই অভিযোগগুলো যেন একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে আসে, সেরকম প্রযুক্তি প্রস্তুত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।”

এর ফলে কর্তৃপক্ষ সরাসরি ভোক্তাদের অভিযোগগুলো যাচাই করতে পারবে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে,” বলেন তপন কান্তি ঘোষ।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে এই নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে বলে জানান মি. ঘোষ।

ইভ্যালি নিয়ে আরও যেসব সিদ্ধান্ত

বৈঠকে ইভ্যালি সম্পর্কে যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাতে প্রতিষ্ঠানটিকে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে ‘কারণ দর্শানোর সুযোগ’ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মি. ঘোষ।

“ইভ্যালিকে তাদের বিজনেস প্ল্যান ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেয়া হবে সংশ্লিষ্ট একটি কমিটির কাছে। কমিটি যাচাই করবে যে তারা আসলেই ভোক্তাদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত দিতে পারবে কিনা।

কমিটি যদি তাদের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয় তাহলে প্রয়োজনে তাদের সুযোগ দেবে। কমিটি চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ারও সুপারিশ করতে পারে।”

তবে এই প্রক্রিয়াগুলো সময় সাপেক্ষ হওয়ায় এগুলোর বাস্তবায়নে কিছুটা দেরি হতে পারে বলে মন্তব্য করেন মি. ঘোষ।

সব ধরণেই পণ্যই এখন বাংলাদেশে অনলাইনে কেনা-বেচা হয়।

এ বছরের জানুয়ারি মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের একটি প্রতিবেদনে উঠে আসে যে পণ্য বেচাকেনার ক্ষেত্রে ইভ্যালি আইন ভঙ্গ করেছে।

এর পর জুন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি তদন্ত দল ইভ্যালির কার্যক্রমের কিছু অনিয়ম চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দাখিল করে।

এর পরদিনই বেশ কয়েকটি ব্যাংক ইভ্যালি সহ আরো কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার ভিত্তিতে সেসব প্রতিষ্ঠানের সাথে লেনদেন বাতিল করে।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিরুদ্ধে দুদক সহ বিভিন্ন সংস্থা যখন নানা অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে, তখন আগাম টাকা দিয়েছেন, এমন গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহ পাওয়ার ব্যাপারে নতুন করে উদ্বেগ বা সংকট তৈরি হয়েছে।

গ্রাহকদের অনেকে অভিযোগ করেছেন, ইভ্যালির সাথে যোগাযোগ করে কোন সাড়া মিলছে না এবং তারা প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় বন্ধ পাচ্ছেন।