স্বর্ণ জয়ের মিশনে শেষ আটের লড়াইয়ে মিসরের মুখোমুখি হয়েছে ফুটবলের পরাশক্তি ব্রাজিল।
জয়ের বিকল্প নেই এই নকআউটপর্বে। হারলেই আর্জেন্টিনা দলের মতো ফিরে যেতে হবে দেশে। যে কারণে সেরা একাদশ নিয়েই মাঠে নামে সেলেকারও।
বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় শনিবার জাপানের সাইতামা স্টেডিয়ামে শুরু হয় ম্যাচটি। আর সেই ম্যাচে মিসরকে ১-০ গোলে হারিয়ে টোকিও অলিম্পিকের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে ব্রাজিল।
ম্যাচ শুরুর ৫ মিনিটেই মিসর দলে হানা দেয় ব্রাজিল। দানি আলভেসের দারুণ এক ক্রসে মিসরের জালের দেখা পেয়ে যাচ্ছিল প্রায় ব্রাজিল। কিন্তু গোলকিপার এল শেনাওয়ে কোনোমতে জাল সুরক্ষিত রাখেন। পরবর্তী ১০ মিনিট মাঠমাঝে দুর্দান্ত খেলে ব্রাজিলিয়ানরা।
ছোট ছোট পাসে মিসরের খেলোয়াড়দের বোকা বানাতে দেখা যায় দিয়াগো কার্লোস, রিচার্লিসন, নিনো ও ক্লাউদিনহোকে। এরইমধ্যে কয়েকবার আক্রমণে উঠলেও মিসরের রক্ষণকে ভাঙতে পারেননি তারা।
তবে ১২তম মিনিটে ব্রাজিলই গোল হজম করে ফেলত প্রায়। ভাগ্যগুনে বেঁচে গেছে সেলেকাওরা। বাঁ-পাশ থেকে পাওয়া ক্রসে নিজেদের ডি-বক্সের কাছে ভুল পাস দিয়ে বসেন কালোর্স। বল চলে আসে মিসরের রামাদান সোবির পায়ে। উড়িয়ে বাড়িয়ে দেন আকরাম তৌফিকের কাছে। তৌফিক মাথাও ছোঁয়ান। কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি। ব্রাজিলের গোলবারের ডানপাশ কেটে বেরিয়ে যায় বল।
১৫তম মিনিটে লং পাসে ফের আক্রমণে ওঠে ব্রাজিল। ম্যাথিউস চনুহার হেডে বল যায় অ্যান্তোনির পায়ে। তিনি দেন রিচার্লিসনকে। তবে রিচার্লিসন ব্যর্থ হন।
১৯তম মিনিটে গুইমারেস থেকে পাওয়া বলে পা ছুঁইয়ে সোজা চুনহার কাছে বল উড়িয়ে দেন অ্যান্তোনি। বলে মাথাও ছোয়ান চুনহা। কিন্তু দারুণ এক পাঞ্চে বল ক্লিয়ার করেন গোলকিপার এল শেনাওয়ে।
২৩তম মিনিটে ফের ব্রাজিলের একটি আক্রমণেকে ঠেকিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে মিসর। কিন্তু এল এরাকির নেওয়া দুর্বল শট গ্লাভসবন্দী করতে বেগ পেতে হয়নি ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার সান্তোসের।
৩০তম মিনিটে দানি আলভেসের একটি বিপজ্জনক শট ক্লিয়ার করেন মিসরের এলউইঞ্চ। ৩২তম মিনিটে ফতুয়াহকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিলের অ্যান্তোনি।
৩৭ মিনিটে মিসরের গোলমুখ খুলতে সামর্থ্য হয় ব্রাজিল। ক্লাউদিনহো আর রিচার্লিসনকে থামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে মিশরের ডিফেন্ডাররা। আর মাঝখানে ফাঁকায় বল পেয়ে জালের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন ম্যাথিউস চুনহা।
অতিরিক্ত সময় তিন মিনিটেও সমতায় ফিরতে পারেনি মিসর। ফলে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মিসর।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জোড়া গোলের দেখা পেতে পারতেন চুনহা। কিন্তু তার শট হাতের ছোঁয়ায় গোলবারের ওপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন এল শেনাওয়ে।
দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে স্কোরার চুনহাকেই উঠিয়ে নেন ব্রাজিল কোচ। নামান পাওলিনহোকে। ১৫তম মিনিটে ক্লাউদিনহোর একটি পাসে ঠিকমতো বল এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি রিচার্লিসন।
২১তম মিনিটে পাওলিনহোর দুর্দান্ত এক প্রচেষ্টা রুখে দেন মিসরের গোলকিপার এল শেনাওয়ে। ২৮তম মিনিটে পাওলিনহোর আরো একটি শট ঠেকিয়ে দেন মিসরের গোলকিপার। ৩৯তম মিনিটে তাহের মোহামেদকে তুলে নিয়ে মাহেরকে নাম মিসরের কোচ।
শেষদিকে গোল পেতে মরিয়া হয়ে উঠে মিসর। ব্রাজিলের ডি-বক্সে হানাও দেয়। ব্রাজিলে বিপজ্জনক অঞ্চলে ফ্রি-কিকও পায় মিসর। ফ্রি-কিক থেকে পাওয়া বলে হেগাজি পা ছোঁয়ালেও সান্তোসের পক্ষে কষ্ট হয়নি তা লুফে নিতে।
পরের মিনিটেই মহসেনের একটি চেষ্টা রুখে দেন সান্তোস।
দ্বিতীয়ার্ধের নির্ধারিত ৪৫ মিনিট শেষে তিন মিনিট অতিরিক্ত সময় দেন রেফারি। কিন্তু সমতায় ফিরতে পারেনি মিসর।
ফলে রেফারির শেষ বাঁশিতে ১-০ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে ব্রাজিল। আর অলিম্পিকের ফুটবল ইভেন্টকে বিদায় জানায় মিসর।