রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত ই-কমার্স সাইট ই-অরেঞ্জ কার্যালয়ের সামনের সড়ক থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গিয়ে বিক্ষোভ করছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। মোটরসাইকেল বা সমমূল্যের রিফান্ড দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা।
আজ শুক্রবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কয়েক শ গ্রাহক জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গুলশানে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির অফিসের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন এসব গ্রাহক। এ সময় গুলশানের ১৩৬/১৩৭ নম্বর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তারা বিক্ষোভ মিছিলের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে গুলশানের বিভিন্ন সড়কে শোডাউনও করেন।
বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা জানান, ক্রিকেটার মাশরাফির বিজ্ঞাপনে আস্থা রেখে তারা টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কেন এতদিন ই-অরেঞ্জের ব্যাংক হিসাব তদারকি করেনি, তার জবাব চান। তাঁরা বলেন, ই-অরেঞ্জে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন তাঁরা। এসব অর্থ ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন। ই-অরেঞ্জ ডট শপ লাখো গ্রাহকের অর্থ নিয়ে পণ্য না দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে বলেও মনে করেন তাঁরা।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, দুপুর ১২টার দিকে কয়েক শ গ্রাহক গুলশানে ই-কমার্স সাইট ই-অরেঞ্জ কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করতে থাকেন। আমরা তাঁদেরকে বুঝিয়ে সরিয়ে দিয়েছি।
প্রতারণার অভিযোগ এনে গত ১৬ আগস্ট রাতে ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা করেন মো. তাহেরুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক। মামলা দায়েরের পরদিন ১৭ আগস্ট ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান আদালতে এসে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চিফ অপারেটিং অফিসার আমান উল্যাহকে গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে ২৪টি ক্রেডিট কার্ড, ১৬ লাখ টাকা এবং গাড়ি জব্দ করা হয়। গত ১৯ আগস্ট তিনজনকেই রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল পণ্য কেনার জন্য ই-অরেঞ্জে অগ্রিম টাকা দেন বাদী তাহেরুল। তবে ই-অরেঞ্জ নির্ধারিত তারিখে পণ্য সরবরাহ করেনি। টাকাও ফেরত দেয়নি। নিজেদের ফেসবুক পেজে বারবার নোটিশ দিয়েছে, সময় চেয়েছে। কিন্তু পণ্য ও টাকা দেয়নি। সর্বশেষ তারা গুলশান-১-এর ১৩৬/১৩৭ নম্বর রোডের ৫/এ নম্বর ভবনে অবস্থিত অফিস থেকে পণ্য ডেলিভারির কথা বললেও তারা ডেলিভারি দেয়নি। এ ছাড়া তারা যে বিভিন্ন আউটলেটের গিফট ভাউচার বিক্রি করেছিল, সেগুলোর টাকা আটকে রাখায় আউটলেটগুলো ভাউচারের বিপরীতে পণ্য দিচ্ছে না।
মামলার বাদী তাহেরুল বলেন, করোনাকালীন আমাদের কষ্টার্জিত অর্থ পাচ্ছি না, বরং প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা পরিবর্তন নিয়ে নতুন নতুন তথ্য পাচ্ছি। এ ছাড়া আজ পর্যন্ত তারা ভুক্তভোগীদের কোনো পণ্য ডেলিভারি না করে এক লাখ ভুক্তভোগীর প্রায় ১১০০ কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।