মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা রেলস্টেশনের কাছে আজ রোববার দুপুরে ট্রেনের ধাক্কায় বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের দুই আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচজন। তাঁদের সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত যাত্রী, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মাইক্রোবাসে করে বরের আত্মীয়স্বজন কনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। রেললাইনের ওপর দিয়ে কনের বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা। মাইক্রোবাসটি রেললাইন পাড়ি দিয়ে সেদিকে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। এ সময় ছুটে আসছিল ট্রেন। আশপাশের লোকজন চিৎকার করে মাইক্রোবাসের চালককে সতর্ক করেন।

কিন্তু তিনি কোনো কথা না শুনে রেললাইন অতিক্রমের চেষ্টা চালান। একপর্যায়ে ট্রেনটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে ঠেলে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়। এতে মাইক্রোবাসে থাকা শিশুসহ দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়।

নিহত দুজন হলেন সিলেট নগরের আম্বরখানা লোহারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন (৪০) ও কামাল উদ্দিনের ছেলে আফিফ (৫)। আহত হন কামাল উদ্দিন (৪৫), তাঁর স্ত্রী রুবি বেগম (৩০), ছেলে লাবিব (৭), বোন লিলি বেগম (৪০) এবং ফরিদ উদ্দিনের মেয়ে রিজু (১৮)। এর মধ্যে কামাল ও রুবির অবস্থা সংকটাপন্ন। তাঁরা হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।

সরেজমিনে আজ বেলা দেড়টার দিকে দেখা যায়, হোসেনপুর এলাকায় সিলেট-কুলাউড়া সড়কের পাশ ঘেঁষে রেললাইন পড়েছে। সেখানে সড়ক থেকে রেললাইনের ওপর দিয়ে প্রায় ১০ ফুট চওড়া একটি কাঁচা রাস্তা হোসেনপুর গ্রামের ভেতরে গেছে। ওই স্থান থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে রেললাইনের পাশে দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসটি পড়ে আছে।

এলাকাবাসী ও বরের পরিবারের সদস্যরা বলেন, হোসেনপুর গ্রামের সোহেল আহমদের আজ বিয়ের দিন ছিল। ওই অনুষ্ঠানে সিলেট থেকে তাঁদের কিছু আত্মীয়স্বজন আসছিলেন। বেলা পৌনে একটার দিকে ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়।

দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওছার দস্তগীর। বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মাইক্রোবাসের চালকের ভুলের কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

কুলাউড়া জংশন রেলস্টেশনের মাস্টার মুহিব উদ্দিন বলেন, হোসেনপুরে স্থানীয় লোকজন অবৈধভাবে রেললাইনের ওপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করেছেন। কুলাউড়া থেকে ভাটেরা স্টেশন পর্যন্ত এলাকায় এ রকম আরও কয়েকটি রাস্তা আছে। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকজন মাঝেমধ্যে বেড়া স্থাপন করে এসব রাস্তা বন্ধ করে রাখেন। কিন্তু লোকজন পরে বেড়া তুলে ফেলেন।