বিশেষ প্রতিনিধি:
সিলেট জেলার ওসমানী নগর থানা এলাকায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের এটিএম মেশিনের লক ভেঙ্গে ২৪ লক্ষাধিক টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
গ্রেফতারকৃতদের নাম: ১। মোঃ শামীম আহাম্মেদ, ২। নূর মোহাম্মদ সেবুল ও ৩। মোঃ আব্দুল হালিম। গত ২১ সেপ্টেম্বর ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানী ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তাদের হেফাজত হতে লুন্ঠিত (দশ লক্ষ আট হাজার টাকা), ২ টি মোবাইল ফোন, ০১ টি ছুরি, ১ টি প্লাস ও মাথায় ব্যবহৃত ০৩ টি কাপড়ের টুকরা জব্দ করা হয় ।.
উল্লেখ্য, গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং তারিখ রাত ০৩:১৫ টায় কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ওসমানী নগর থানার শেরপুর নতুন বাজার হাজী ইউনুস উল্ল্যাহ মার্কেটের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিঃ এর নিচ তলায় স্থাপিত ব্যাংকের এটিএম বুথের দায়িত্বরত পাহারাদারকে মারপিট করে হাত ও মুখ স্কচটেপ পেঁচিয়ে বেধে ফেলে। এরপর দুষ্কৃতিকারীরা এটিএম বুথে স্থাপিত এটিএম মেশিনের সম্মুখ দরজা ও লক ভেঙ্গে নগদ ২৪,২৫,৫০০/- টাকা নিয়ে যায়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং তারিখে সিলেট জেলার ওসমানী নগর থানায় একটি মামলা রুজু হয়। উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞান সর্ম্পকে পারদর্শী। এটিএম বুথের এটিএম মেশিন ভেঙ্গে টাকা লুটের মূল পরিকল্পনাকারী মোঃ শামীম আহাম্মেদ নিয়মিত ভারতীয় মেগা সিরিয়াল সিআইডি অনুষ্ঠানটি দেখতেন। উক্ত সিরিয়াল দেখে এটিএম বুথের এটিএম মেশিন ভাঙ্গার কলা কৌশল রপ্ত করেন এবং টাকা লুটের পরিকল্পনা গ্রহন করে। পরিকল্পনা মোতাবেক তার সহযোগী গ্রেফতারকৃত নূর মোহাম্মদ সেবুল ও মোঃ আব্দুল হালিমদের সাথে আলোচনা করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তারা মুখে মাস্ক, মাথায় গোলাপী রংয়ের কাপড় বেঁধে ও মাথায় ক্যাপ পরিধান করে এবং শাবল ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লি: শেরপুর শাখার এটিএম বুথে প্রবেশ করে। এটিএম বুথের সিসি ক্যামেরায় তাদের চেহারা যেন না দেখা যায় সেজন্য কালো রংয়ের স্প্রে করে ক্যামেরার লেন্স ঝাপসা করে দেয়। এ সময় তারা এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ডকে মারধর করে ও হাত ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে বাধে।
পরবর্তীতে তারা শাবল দিয়ে এটিএমে বুথের লক ও বক্স ভেঙ্গে ২৪,২৫,৫০০/- টাকা নিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে অন্যান্য থানায় মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় জড়িত চারজনের মধ্যে একজন এখনো পলাতক রয়েছে বলে জানায় পুলিশ গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জুনায়েদ আলম সরকার এর তত্ত্বাবধানে সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম পিপিএম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।