মাহফুজ বাবু
১৪ বছরের কিশোরী আপন বোনের মেয়ে (ভাগ্নী) কে ধর্ষণ করলেন মামা। ধর্ষণের পর ভাগ্নি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে জোরপূর্বক ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করিয়ে মৃত নবজাতক কে ধর্মী বিধান না মেনেই গোপনে দাফনও সম্পন্ন করে মামা। এ ঘটনায় ধর্ষক এবং পরবর্তীতে সহায়তাকারী দুই মামাকে আটক করেছে র্যাব। র্যাব প্রেস ব্রিফিংয়ে জানায়, চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার জুনাসার গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ শিপন হোসেন (১৯) গত বছরের অক্টোবর হতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তার ১৪ বছরের আপন ভাগ্নিকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণের ফলে মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে।
প্রথমে মেয়েটির মা বুঝতে পেরে তার আপন ভাই (ধর্ষক শিপনের বড় ভাই) মোঃ মফিজুল ইসলামকে (৩৫) জানালে সে বিষয়টি প্রকাশ করতে নিষেধ করে, কাউকে জানালে পরিবারকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করবে বলে ভয়-ভীতি দেখায়। এরই মধ্যে মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) মেয়ের পরিবারকে কুমিল্লার লাকসামে একটি ভাড়া বাড়িতে জোরপূর্বক নিয়ে আসে এবং সেখানে গর্ভপাত করানোর জন্য জোরপূর্বক ওষুধ সেবন করায়। ওষুধ সেবনের ফলে গত ২৪ মে পেটে ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মেয়েটি একটি মৃত সন্তান প্রসব করে। সন্তান প্রসবের পর কোন ধর্মীয় বিধান অনুসরণ না করেই দ্রুত তম সময়ের মধ্যে মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) গোপনে বাচ্চাটিকে দাফন করে। অকাল গর্ভপাত হওয়ার কারণে মেয়েটি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তার মা বিষয়টি মোঃ মফিজুল ইসলামকে (৩৫) জানায় এবং অসুস্থ মেয়েকে চিকিৎসার জন্য টাকা চায়।
মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) কোন সাহায্য না করে তাদেরকে লাকসামের ভাড়া বাড়ি থেকে পূণরায় গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ধর্ষক মোঃ শিপনকে আত্মগোপনে রাখে বিষয়টি কারও কাছে না বলার জন্য বারবার হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে ভুক্তভোগি পরিবারকে। বৃহস্পতিবার কুমিল্লা র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, মামার হাতে ধর্ষণের শিকার মেয়ের মা বিষয়টি আত্মীয়স্বজন এবং স্থানীয় বিভিন্ন লোকজনকে জানিয়ে সামাজিকভাবে কোন প্রতিকার ও সহযোগিতা না পেয়ে এক সপ্তাহ পূর্বে মোবাইল ফোনে বিষয়টি র্যাবকে অবহিত করে। পরে র্যাব বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে থাকে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মুদাফফরগঞ্জ এবং চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার বানিয়া দিঘীরপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষক মোঃ শিপন হোসেন (১৯) এবং তাকে সহায়তাকারী মোঃ মফিজুল ইসলামকে (৩৫) আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করে বলেও জানায় র্যাব। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।