গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, এমপি বলেছেন, পরিবেশ সুরক্ষায় বৈশ্বিক সমঝোতা ও পারস্পারিক সহযোগীতা দরকার। আজ মঙ্গলবার গণপূর্ত অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত ” অ্যাসারেটিং আরবান এ্যাকশন ফর এ কার্বন ফ্রী ওয়ার্ল্ড“‍(Accerating Urban Action for a Carbon free World) বা নগরীয় কর্মপন্থা প্রয়োগ করি, কার্বনমুক্ত বিশ্ব গড়ি” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বায়ুমন্ডলে কার্বন বৃদ্ধির কারনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ুর যে পরিবর্তন হয়েছে, তা কোন একক জাতি বা রাষ্ট্রের সৃষ্টি নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলা কোন একক রাষ্ট্র বা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য চাই বৈশ্বিক সমঝোতা ও বিভিন্ন জাতি ও রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পারিক সহযোগীতা।

প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে আরো বলেন, কার্বন নি:সরণ হ্রাসের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে সাক্ষরিত প্যারিস চুক্তির প্রতিটি শর্ত আগামী প্রজন্মের স্বার্থে আমাদের প্রত্যেকের অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা উচিত।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন, ভৌত অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার, বিনিয়োগ বিকাশসহ উন্নয়নের সকল সূচকে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ, মহকাশে সেটেলাইট উৎক্ষেপন, রাজধানীতে মেট্রোরেলসহ বৃহৎ বাজেটের বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে। তাঁর একক নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঈর্ষানীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

উন্নয়ন ও অগ্রগতির পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষা বিশেষ করে বায়ুমন্ডলে কার্বন নিঃস্বরন হ্রাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য নির্মাণ শিল্পে পোড়ামাটির ইটের পরিবর্তে হলোব্লক, ফোরোসিমেন্ট ব্লক, এএসি ব্লক ইত্যাদির ব্যবহার উৎসাহিত করা হচ্ছে। ভবনসমূহ নির্মাণে উন্নতি প্রযুক্তি, পরিবেশবাদ্ধব ডিজাইন, নিজস্ব সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, পর্যাপ্ত সবুজায়নসহ উন্নতমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, পরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্দ্যেশ্যে নির্মাণ পরিকল্পনায় গ্রীনস্পেস এর সংস্থান রাখা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎপাদনের জন্য ভূমি সংরক্ষণের প্রস্তাব রাখাসহ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড-২০২০ এর আওতায় পরিবেশ বাদ্ধব ইমারতের নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণের অনুমোদন ও নির্মাণকাজ করা হয়ে থাকে।

এছাড়া এ মন্ত্রণালয় গবেষণার মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব ইমারাত নির্মাণ কৌশলসহ নির্মাণ সামগ্রীর উদ্ভাবন, প্রয়োগ ও প্রসারের কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও বাস্তবায়িত প্রকল্পসমূহে Green Building Technology, Rain Water Harvesting, Sewrage Treatment Plant, Solar Panel সহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক ড. খুরশিদ জাবিন হোসেন তৌফিক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ আলোচক হিসেবে হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক আবু সাদেক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মাহমুদ, নগর গবেষণা কেন্দ্রের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইসরাত নাজিয়াসহ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার উর্ধ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ হেমায়েত হোসেন সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।