এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কড়া নজরদারিতে থাকবে কোনো আইডিতে সন্দেহ হলে তা মনিটরিং করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আজ বুধবার (২৭ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষার নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা সূত্র মতে, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহ আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া নজরদারি শুরু করা হবে। কেউ যেন প্রশ্নপত্র ফাঁস করা বা তার গুজব ছাড়াতে না পারে সেসব বিষয় মনিটরিং করা হবে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপরও নজরদারি করা হবে। কোনো অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন হলে সেটি বন্ধ করে খতিয়ে দেখা হবে। বিশেষ করে ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপে নজরদারি বসানো হবে।
সূত্র মতে, কোনো আইডি থেকে গুজব ছাড়ালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে আটক করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোনো আইডিতে সন্দেহ হলে তাকে নজরদাবির আওতায় আনা হবে।
চলতি বছরে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন পরীক্ষার্থী। মোট ৩ হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে এবারের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মোট ২৯ হাজার ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। সারা দেশে ৯টি সাধারণ বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি /দাখিল/এসএসসি(ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ১৮ লাখ ৯৯৮ জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেবে।
অন্যদিকে ৭১০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট ৩ লাখ এক হাজার ৮৮৭ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ৭৬০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ভোকেশনালে পরীক্ষা দিচ্ছে এক লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে মোট পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন। এই বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১৫১টি এবং কেšদ্র বেড়েছে ১৬৭টি।
এদিকে, চলতি বছরে এসএসসি পরীক্ষার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের গ্রুপভিত্তিক বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে-
বিজ্ঞান বিভাগে – ঢাকা বোর্ডে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩১ জন , রাজশাহী বোর্ডে ৮১ হাজার ২২৪ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৫৪ হাজার ৫৮৩ জন, যশোর বোর্ডে ৩৭ হাজার ৬০১ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৩১ হাজার ৫৭ জন, বরিশাল বোর্ডে ২৫ হাজার ১১২ জন, সিলেট বোর্ডে ২১ হাজার ৬২৩ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৭৯ হাজার ৩৬৫ জন ও ময়মনসিংহ বোর্ডে ৪১ হাজার ৮৩৫ জন।
মানবিক বিভাগে- ঢাকা বোর্ডে ২ লাখ ৯৫৭ জন , রাজশাহী বোর্ডে ১ লাখ ১৪ হাজার ৭২৫ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৮৯ হাজার ৩৬১ জন, যশোর বোর্ডে ১ লাখ ১৭ হাজার ১০৯ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬৫ হাজার ১৫৭ জন, বরিশাল বোর্ডে ৫৯ হাজার ৬৫৬ জন, সিলেট বোর্ডে ৮৯ হাজার ৯৩৩ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ১ লাখ ৯ হাজার ৭০৬ জন ও ময়মনসিংহ বোর্ডে ৭৭ হাজার ৪৮১ জন।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে- ঢাকা বোর্ডে ১ লাখ ৪০ হাজার ৭১২ জন, রাজশাহী বোর্ডে, ১১ হাজার ৬১৯ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৮০ হাজার ৯৩০ জন,যশোর বোর্ডে ২৬ হাজার ৫৭২জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬৪ হাজার ৭১১ জন, বরিশাল বোর্ডে ২০ হাজার ২২২ জন, সিলেট বোর্ডে ৯ হাজার ৫৫৫ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৪ হাজার ৩৭৫ ও ময়মনসিংহ বোর্ডে ১১ হাজার ৩৮৬ জন।
বিজ্ঞান বিভাগে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লাখ ৬ হাজার ৮৩১ জন, মানবিকে ৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৫ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮২ জন।
পরীক্ষা সংক্রান্ত কিছু নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ২০২১ সালের সংশোধিত ও পুর্নবিন্যাসকৃত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক ৩টি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা হবে। নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞানও খেলাধূলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়ে এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সাথে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর অনলাইনে বোর্ডে পাঠাবে।