আজ থেকে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হলো বলে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। আর তা না হলে গণঅনশনের মধ্য দিয়ে আজকে আন্দোলন শুরু হলো, সরকার পতনের।
আজ শনিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি ও বিদেশের উন্নত চিকিৎসার দাবিতে গণঅনশনে তিনি কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা আমাদের জীবন-মরণের সমস্যা। আমাদের অধিকারের সমস্যা। ১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম সে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার সমস্যা। খালেদা জিয়া দেশের মাটির সাথে অবিচ্ছেদ্য। আমাদের মা এবং মাটি বলতে খালেদা জিয়াকে বুঝি। এ নেত্রীকে অবশ্যই আমাদের মুক্ত করতে হবে। তার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত আছি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা করতে দেবেন কি-না, এটাই আগামী দিনের রাজনীতিকে বিভাজন করবে। আপনি যদি খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা করতে দেন বাংলাদেশের রাজনীতি এক দিকে যাবে। আর যদি চিকিৎসা করতে না দেন তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতি আরেক দিকে যাবে। আর যদি অন্যদিকে যায় আপনি প্রধানমন্ত্রী সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আসুন দুই হাত তুলে শপথ গ্রহণ করি, দেশনেত্রীকে তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না।
তিনি আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আজকে এত অসুস্থ, তিনি আজকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমি ডাক্তারদের সাথে কথা বলেছি বারবার, বিদেশি ডাক্তারদের সাথে কথা বলেছি, তারা বলেছেন বাংলাদেশে যা চিকিৎসা দেয়া সম্ভব এখানে তারা তা দিচ্ছেন, দিয়েছেন। তার কিছু জটিলতা আছে বিদেশে আরো অ্যাডভান্স সেন্টার ট্রিটমেন্ট না হলে তাকে সুস্থ করা যাবে না। তার পরিবার থেকে আবেদন জানানো হয়েছিল তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার জন্য, তারা সে সুযোগ দেয়নি। ফিরিয়ে দিয়েছে। উপরন্তু পার্লামেন্টে সংসদ নেত্রী এমন ভাষায় কথা বলেছেন, যে ভাষা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এবং মিথ্যাচর করেছেন আইনমন্ত্রী। ৪০১ ধারায় সরকারের সম্পূর্ণ অধিকার আছে। এবং এটা তাদের দায়িত্ব। নির্দেশ দিয়ে বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আমার নেত্রী খালেদা জিয়া আজকে বন্দি। আজ নভেম্বর মাসের ২০ তারিখ। কাল ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস। এ দিবসের প্রতিষ্ঠালগ্নের মহাপুরুষ, মহানায়ক যারা তাদের মধ্যে এক নম্বরে রয়েছেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। সেই বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী আজকে বন্দি। সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আগে আমি আবেদন করলাম, এ দিবস অসম্পূর্ণ হবে যদি আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে অশ্রদ্ধা করি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানীর সঞ্চালনায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে অনশন কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আযম খান, শামসুজ্জামান দুদু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের আহ্বায়ক হাসান জাফির তুহিন সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুল হক খোকন সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।