ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। কোনোভাবে এর দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশ (টিসিবি) বিভিন্নভাবে ব্যবস্থা নিলেও খুব একটা কাজে আসছে না বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।
গত বৃহস্পতিবার প্রতিকেজি পেঁয়াজ ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হলেও গতকাল শুক্রবার ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। ভারতীয় পেঁয়াজ না আসা পর্যন্ত এ দাম বাড়তে থাকবে বলে জানান পাইকারি ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে মিয়ানমার ও মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা কেজি। রাজধানীর কারওয়ানবাজার, হাতিরপুল বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
কারওয়ানবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, মোকাম থেকে ২২০ টাকা কেনা পড়ে। পাইকারিতে ২৩০ টাকায় বিক্রি করি। তা হলে খুচরা বাজারে ২৫০ টাকা দাম হবেই। ভারতীয় পেঁয়াজ ছাড়া কম দামে পেঁয়াজ পাওয়া যাবে না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ৩শ টাকা কেজি হওয়াও অসম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ায় ক্রেতা অনেক কমে গেছে। এখন সবাই পেঁয়াজের দাম জিজ্ঞাসা করে, তার পর একটা মুচকি হাসি দিয়ে দুটা কথা শুনিয়ে চলে যায়।
শ্যামবাজারে গিয়ে দেখা যায়, সব ধরনের পেঁয়াজের পাইকারি দাম ১৯০ থেকে ২১০ টাকা কেজি। আংশিক পচা, ময়লা পেঁয়াজও ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সরবরাহ কম হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে বলে শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। পচা পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়ে
শ্যামবাজারের ব্যবসায়ী মোস্তাক হোসেন বলেন, দেড় মাস আগে এই আংশিক পচা পেঁয়াজ ফেলে দিতাম। দোকানের আশপাশে পেঁয়াজ টোকাইরা কুড়িয়ে নিয়ে যেত। কিন্তু এখন একেকটা পেঁয়াজের দিকেই নজর রাখছি। পারলে নিজেই কুড়িয়ে আনি।
বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহের বিষয়ে বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দিন বলেন, মিয়ানমারের সরবরাহ কমে গেছে। তাই নতুন করে মিসর, তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে।
সে পরিপ্রেক্ষিতে আরও এক সপ্তাহ আগে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ হবে না। এ ছাড়া কার্গো বিমানের মাধ্যমে টিসিবি পেঁয়াজ আমদানি করলেও তা তাদের ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে সারাদেশে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করবে। ফলে বাজারের দাম কমাতে তেমন ভূমিকা রাখবে না।
ভোক্তা অধিকার বাংলাদেশের (ক্যাব) গোলাম রহমান বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেয়েছে। কিন্তু এখন নিজেরাই আমদানির কথা বলছে। এ ব্যবস্থা যদি আরও এক মাস আগে নিত, তা হলে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া লাগত না। পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকার মধ্যে গতকাল ঢাকার মিরপুরের বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর।
গত সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে অস্থির হয়ে ওঠে পেঁয়াজের বাজার। ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। বাংলাদেশ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের ওপরই নির্ভরশীল। ফলে দেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়তে থাকে।