‘আজ খালেদা জিয়ার মামলার জামিন শুনানি। আশা করব, বিচার বিভাগ এর স্বাধীনতা রক্ষা করবেন। সত্যিকার অর্থে মামলার যে রায় হওয়া উচিত সেই রায় দেবেন।’

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ খালেদা জিয়ার মামলার জামিন শুনানি রয়েছে। আমরা আশা করব, প্রত্যাশা করব যে, বিচার বিভাগ তারা তাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করবেন। সত্যিকার অর্থে মামলার যে রায় হওয়া উচিত সেই রায় দেবেন। তিনি বলেন, দেশনেত্রী কেবল একজন নেতা নন, তিনি গণতন্ত্রের মাতা। তিনি এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে ৯ বছর সংগ্রাম করেছেন। তিনি এক এগারো সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। তিনি এই দখলদার  আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তাঁকে আজ মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী জামিন তাঁর (খালেদা জিয়া) প্রাপ্য হক, অধিকার। সেই অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এধরনের মামলায় সবাই জামিনে আছেন। নাজমুল হুদা জামিনে আছেন, সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া জামিনে আছেন। মহিউদ্দিন খান আলমগীর জামিনে আছেন। সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী আব্দুল মান্নান জামিনে আছেন।

বর্তমান সরকার দুঃশাসন চালাচ্ছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, নিজেদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ীভাবে কুক্ষিগত করার জন্য গুমের আশ্রয় নিয়েছে। যা অতীতে আমরা বাংলাদেশে কখনও দেখিনি। তারা গুম, হত্যা, গ্রেপ্তার করছে, আবার মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। এইভাবে নির্যাতন, নিপিড়ন দমননীতির মধ্যে দিয়ে তারা বাংলাদেশে একদলীয় শাসনব্যস্থা স্থায়ী করতে চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা আজকে পত্রিকায় দেখেছেন একজন সেনাবাহিনীর অফিসার র‌্যাবে কাজ করতেন। অন্যায়ভাবে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছিল। সেই সাজা থেকে বের হয়ে আসার পরে তাকে গুম করে নিয়ে যাওয়া হয়। দেড় বছর পরে তিনি ফিরে এসেছেন, কথা বলছেন না। কিছুদিন আগে আমরা দেখেছি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে সাত মাস পরে ফিরে এসেছে, কথা বলে না। তারও আগে একজন রাষ্ট্রদূত ৯ মাস অজ্ঞাত স্থানে ছিলেন, ফিরে এসে কথা বলছেন না। এখনও একজন জেনারেল গুম আছেন। মীর কাসেম আলীর ছেলেও গুম।

সরকার দেশ চালাতে পারে না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাদের কথায় মনে হয় দেশে উন্নয়নের লহরি বয়ে যাচ্ছে। অথচ আজকে পত্রিকা খুললেই দেখবেন, নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষ দ্রব্যমূল্যে হয়রান হয়ে গেছে। চাল-লবণ-সবজির দাম বাড়ছে, পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। এমন একটা নিত্যপণ্য নেই যার দাম বাড়ছে না। অন্যদিকে শ্রমিক ভাইদের বেতন-প্রকৃত আয় বাড়ছে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে। গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, ‘মার্চ মাসের মধ্যে ধ্বস নামতে শুরু করবে’। এই সরকার সবক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে। তারা দেশ চালাতে চায় রাষ্ট্রকে কব্জায় নিয়ে। তিনি বলেন, এ সরকারের কোনো অধিকার নেই ক্ষমতায় থাকার। তাদের এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নতুন নির্বাচনই  দেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।

শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসেইনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাহউদ্দিন সরকার, বিএনপির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, শ্রমিক দল নেতা মোস্তাফিজুল করিম মজুমদার প্রমুখ।