রাজধানীর আবদুল গণি রোডে অবস্থিত খাদ্য অধিদপ্তরে সাংবাদিক প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো অফিস আদেশ জারি করা না হলেও গতকাল সোমবার দিনভর প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি।

সোমবার সকাল ১১টায় গুরুত্বপূর্ণ দুটি জাতীয় দৈনিকের দুজন সিনিয়র সাংবাদিক খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদের সঙ্গে দেখা করার জন্য অধিদপ্তরে যান। ওই দুই সাংবাদিককে নাম, ঠিকানা ও সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে লিপিবদ্ধ করতে বলা হলে তারা সব নিয়ম মেনেই অধিদপ্তরে প্রবেশ করেন। কিন্তু মহাপরিচালক প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় দুই সাংবাদিক অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন। এক পর্যায়ে মহাপরিচালকের ব্যস্ততা কমলে তার সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে বলা হয়, তিনি অন্য একটি বৈঠকে অংশ নিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে যাবেন। তারা মহাপরিচালকের একান্ত সচিব হারুন অর রশিদের সঙ্গে দেখা করার পরামর্শ দেন।

এ সময় পিএস জানান, ডিজি ব্যস্ত থাকায় তার সাথে দেখা করা সম্ভব না। তিনি পরবর্তী সোমবার যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর ওই দুই সাংবাদিক ডিজির দপ্তর থেকে বের হয়ে আসেন। এ সময় ডিজির দপ্তরের সামনে স্থাপিত নতুন ইলেকট্রনিক গেটে দায়িত্বপালনরত জসীমউদ্দীন ও এম এ জলিল সাংবাদিকদের পথরোধ করে জেরা করেন।

তারা সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান, আপনারা ডিজির কথা বলে অন্য কর্মকর্তাদের রুমে গেলেন কেন? ডিজির রুমে বললে ডিজির রুমেই যেতে হবে। আপনারা অন্য কর্মকর্তাদের রুমে যাওয়ার জন্য পরিচালক প্রশাসনের দপ্তর থেকে চার্জ করা হয়েছে। কেন প্রবেশ করতে দিয়েছি সে জন্য আমাদের গালমন্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বলে দেওয়া হয়েছে ভবিষ্যতে কোনো সাংবাদিককেই খাদ্য অধিদপ্তরে প্রবেশের অনুমতি না দেওয়ার জন্য।

এ সময় সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কারণে অধিদপ্তরে যেতেই হবে- জানালে অন্যান্য বিভাগের কর্মচারীরাও সাংবাদিকদের চার্জ করতে থাকেন। এরপর বিষয়টি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে জানানো হয়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা খাদ্য অধিদপ্তরে গেলে তাদেরকেও বাধা দেওয়া হয়।

খাদ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল দুজন কর্মকর্তা জানান, অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে আমন সংগ্রহ চলছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া খাদ্য অধিদপ্তরের টেন্ডার, চাল এক গুদাম থেকে অন্য গুদামে পরিবহন, চালকলের নিবন্ধনসহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে তদবিরকারীরা খাদ্য অধিদপ্তরে আসছেন। তাদের সাথে তদবিরের দর কষাকষির সুবিধার জন্যই সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাজমানারা খানুম সাংবাদিকদের বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরে সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারবেন না- এমন কোনো বিষয় আমার জানা নেই। আমি যখন মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছি তখন এমন হয়নি। এখন কেন সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে বিষয়টি আমি দেখব।