সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হয় টিরিপানো-মাটুমবোদজি। দুই জনের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ম্যাচে ফিরতে থাকে জিম্বাবুয়ে। কিন্তু জয়ের দেখা পাননি তারা।
৩২৩ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে ভালো শুরু করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। দ্রুতই সাজঘরে ফিরে যান রেজিস চাকাভা। দুই রান করে সফিউলের বলে লিটনের হাত ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে হাঁটেন তিনি। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ ফিল্ডিংয়ে রান আউট হয়ে ফিরেন ব্রেন্ডন টেইলর। যাওয়ার আগে ১১ রান করেন তিনি। শন উইলিয়ামসও বেশিক্ষণ টিকলেন না। বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে এলবিডব্লিউ করে ফেরালেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি করেন ১৪ রান। তারপর প্রতিরোধ গড়ে তুলে জিম্বাবুয়ে। কিন্তু জিম্বাবুয়ের প্রতিরোধ ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। বোল্ড করে ফেরালেন টিনাশে কামুনহুকামউইকে। সাজঘরে ফেরার আগে তিনি ৫১ রান করেন।
তারপর জুটি বেধে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন ওয়েসলি মাধেভেরে ও সিকান্দার রাজা। তবে তাদের জুটি ভাঙেন তাইজুল। তিনি ওয়েসলি মাধেভেরেকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন। এরপর রিচমন্ড মুতুমবামিকে এলবিডব্লিউ করে তাজুল পান নিজের তৃতীয় উইকেট। সাজঘরে যাওয়ার আগে তিনি করেন ১৯ রান। এর পরপরই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা সিকান্দার রাজাকে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ বানিয়ে টাইগারদের মনে স্বস্তি ফেরান অধিনায়ক মাশরাফি। ৫৭ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৬৬ রান করেছেন রাজা।
রাজার সাজঘরে ফেরার পর ঝড় তুলে পঞ্চাশ রান তুলে টিরিপানো-মাটুমবোদজি জুটি। তাদের ঝড়ো ব্যাটিং জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে জিম্বাবুয়েনরা। কিন্তু শেষ ওভারের আল-আমিনের বলে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরন মাটুমবোদজি। যাওয়ার আগে ৩৪ রান করেন তিনি। একপ্রান্ত আটকে খেলতে থাকেন টিরিপানো। আর তাকে সঙ্গ দেন কার্ল মুম্বা। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের শেষ বল খেলেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি তারা। টিরিপানো করেন ৫৫ রান। কার্ল মুম্বা রানের খাতাই খুলতে পারনেনি।
এর আগে ব্যাটি করতে নেমে জিম্বাবুয়ের পেসার কার্ল মুম্বার করা ইনিংসের ৭ম ওভারে তামিমের শটে বল বোলারের হাতে লেগে নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্ট্যাম্প ভেঙে দেয়। ফলে রানের জন্য ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া লিটন দুর্ভাগ্যজনক রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লিটন এই ম্যাচে করলেন ১৪ বলে ৯ রান। এরপর দুর্ভাগ্যের শিকার হন নাজমুল হোসেন শান্তও। রান নিতে না চাইলেও বিভ্রান্তিতে পড়ে বিদায় নেন তিনি। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৭ বলে ঝড়ো ফিফটি তুলে নেন মুশফিকুর রহিম। সাজঘরে যাওয়ার আগে ৫০ বলে ৬টি চারে ৫৫ রান করেন তিনি।
মুশফিকের বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ১০৬ রানের জুটি গড়েন তামিম। মাহমুদউল্লাহও দারুণ ব্যাট করছিলেন। কিন্তু তুলে মারতে গিয়ে জিম্বাবুয়ের মাধেভেরের অসাধারণ এক ক্যাচে পরিণত হন ৫৭ বলে ৪১ রান করা এই ব্যাটসম্যান। এরপর মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে ৩৪ রান যোগ করে বিদায় নেন তামিম।
তামিমের বিদায় নেওয়ার পর মুম্বার বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন ৫ রান করা মেহেদি হাসান মিরাজ। টিকতে পারেননি মাশরাফিও। এক রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। টিরিপানোর করা ইনিংসের ৪৯তম ওভারে কোনো রান না করেই বিদায় নেন তাইজুল। শেষ ওভারে মিঠুন আর শফিউল মিলে যোগ করেন ৯ রান। মিঠুন অপরাজিত থাকেন ১৮ বলে ৩২ রান নিয়ে। সবশেষে ৮ উইকেটে হারিয়ে জিম্বাবুয়ের সামনে ৩২৩ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় বাংলাদেশ।