মাহফুজ বাবু


শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত প্রতিটি বাঙ্গালির মনে তার স্থান চিরস্থায়ী হয়ে আছে। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সেই ভাষণ আজও বাঙ্গালির মনে চেতনা যোগায়। দেশে বিদেশে গবেষণা হয় সেই ভাষণটি নিয়ে। বঙ্গবন্ধু আজ নেই তবে তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শেখ মুজিবের সৈনিকেরা আজও তাকে মনে প্রাণে ভালোবেসে যাচ্ছে।
এরই একটি দৃষ্টান্ত, কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল গ্রামের মো: সেলিম মিয়া।
আসছে ১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল গ্রামের মো: সেলিম গত ২ বছর আগে শুরু করেন চেয়ার তৈরির কাজ। প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় করে চারটি চেয়ার বানিয়ে নিজে না বসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা শেখ হাসিনার, শেখ রাসেল এবং শেখ রেহেনা এর ছবি রাখতে দেখা যায় এবং ছবি রাখার জন্য একটি ঘরও বানানো হয়। শুধু ঘর বানিয়ে থেমে যান নি। বঙ্গবন্ধুর ও তার পরিবারের তথ্যবলি, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযদ্ধাদের তথ্যাবলি, ভাষা ও ভাষা শহিদের তথ্যাবলি, দেশ ও দেশের বিভিন্ন উন্নয়নের তথ্যাবলি, বিভিন্ন শিক্ষামূলক, বেকারত্ব দূরীকরণের তথ্যাবলি ও ইতিহাস জানাতে সেলিমের নিজ উদ্যোগ ও অর্থায়নে শেখ রাসেল জাদুঘর পাঠশালা স্থাপন করেন।

তার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসেন। এর মধ্যে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুন হাসান সহ আওয়ামীলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীরা পরিদর্শন করেন ।

সকাল-বিকাল প্রতিদিন ৪টি ছবিকে খুব যত্নসহকারে নিজ হাতে মুছ পরিষ্কার করে রাখেন। এই চেয়ার ৪টিতে সুন্দর কারুকাজ আর আছে খোদাই করা নৌকার প্রতীক, জাতীয় ফুল শাপলা, জাতীয় পতাকাসহ রয়েছে বিভিন্ন নকশা। মো: সেলিম কিশোর বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং আওয়ামী লীগের সমর্থক। তিনি জানান, আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে নেই, কিন্তু তার আদর্শ এবং স্বপ্ন ঐতিহাসিক পরিকল্পনা সোনার বাংলা গড়ার বাস্তবায়নকারী সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন তার দ্বারাই এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে শৈশব কাল থেকেই লালন পালন করে এতটুকু এসেছি এবং বাকি দিনগুলো তার আদর্শকে বুকে লালন পালন করে পার করে দিতে চাই। তিনি আরো জানান, ৪টি চেয়ারের মধ্যে দুটি চেয়ার বানাতে ২মাস করে ৪ মাস সময় লেগেছে এবং ৩ লক্ষ টাকার অধিক ব্যয় হয়েছে। এটা শুধু বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা ও শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানো মাত্র। তিনি ১৯৯৬ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। তিতুমির সরকারি কলেজ থেকে ইসলামি ইতিহাসে এম.এ পাশ করেও চাকরীতে যোগ দেননি। কারণ একটাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সবার মাঝে তার মত করে ধারণ করার জন্য এলাকা থেকে অনুপ্রাণিত করছেন বলে তিনি জানান। সরজমিনে দেখা যায়, তার এই চেয়ার দেখার জন্য অসংখ্য মানুষ দূর-দূড়ান্ত থেকে এসে দেখে যায় এবং কেউ মোবাইল ও ক্যামেরার মাধ্যমে ছবি তুলে নেন। যে যার যার মত করে ফেসবুকে পোষ্ট করতেও দেখা যায় । তবে শেখ রাসেল স্মরণে পাঠাগারটিতে কোন বই নেই এটা তার আক্ষেপ । কারো সাহায্য সহযোগীতা চান তিনি। শারিরীক সুস্থতার কারনে আপাতত তেমন ইবকাম নেই সমিলটিও ভাড়া দিয়ে দিয়েছেন। ধিরে ধিরে পাঠাগারে বই কিনে পাঠাগারটি পূর্নতা দেবেন বলে জানান। সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে সেলিম বলেন, সকলে যেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়। সকল দল ও মতভেদের উর্ধে তিনি। তিনি জন্মগ্রহণ না করলে হয়তো আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। দেশ ও জাতীর মুক্তির জন্য তার অবদান অনস্বীকার্য।