এসএম জীবন:

কুড়িগ্রামে সাংবাদিকের জামিন আর লোক দেখানো ডিসি প্রত্যাহার কোন বিচার নয়। পূরো ডিসি কান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ উত্তাল সাংবাদিক সমাজ। অনিয়ম ও দূর্ণীতি ধামাচাঁপা দিতে গভীর রাতে নিজ বাসভবন থেকে কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুলকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার ও মনগড়া ভাবে কারাদন্ড প্রদানের বিষয়টি আজ পরিস্কার হয়ে গেছে।

কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীন, সহযোগি আরডিসি নাজিম উদ্দিনসহ পুরো টিমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় বিচার দ্রুত আইনে সম্পন্ন করতে হবে। একজন সাংবাদিককে গভীর রাতে ঘরের দরজা লাথি মেরে ভেঙ্গে স্ত্রী সন্তানদের সামনে থেকে ধরে নিয়ে চোখ বেঁধে উলঙ্গ করে মারপিট, লাঞ্ছিত ও ক্রসফায়ারের হুমকির ঘটনায় পুরো সাংবাদিক সমাজ লজ্জিত ও ক্ষুব্ধ। ডিসির বাহিনী দিয়ে গভীর রাতে ডিসি অফিসে নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নামে কারাদন্ডে দন্ডিত আইনের লঙ্ঘন বলেও প্রতিবাদ জানানো হয়।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ডিসি কান্ডের প্রতিবাদে দেশব্যাপী ডাকা প্রতিবাদ কর্মসূচীতে ঝালকাঠি জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর একথা বলেছেন। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত বিএমএসএফ’র সকল শাখাসমুহ ছাড়াও সকল সাংবাদিক সংগঠনকে মাঠে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে থাকার আহবান জানান তিনি।

বিএমএসএফ জেলা সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চুর সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি আজমীর তালুকদার।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএমএসএফ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম রেজাউল করিম, ঝালকাঠি সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইসরাত জাহান সোনালী, নারী নেত্রী ডালিয়া নাসরিন, ঝালকাঠি টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিউল আজম টুটুল, বিএমএসএফ’র রাজাপুর শাখার সভাপতি আহসান হাবিব সোহাগ, জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান প্রমূখ।

সমাবেশে একাত্মতা ঘোষণা করেন ঝালকাঠি নাগরিক ফোরামের যুগ্ম-সম্পাদক সরওয়ার হোসেন স্বপন ও প্রেসক্লাব সদস্য আলী হায়দার তালুকদার, মিডিয়া ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন প্রমূখ।

সমাবেশে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মাগুরার এমপি শেখরের মামলা, ঢাকায় সাংবাদিক কাজল অপহরণ, মাদারীপুরে সাংবাদিক দম্পতির ওপর এলজিইডির কর্মচারী ও ঠিকাদারদের হামলার ঘটনায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ।

অন্যদিকে কুমিল্লায় সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে মাদক ব্যবসায়ীরা কুপিয়ে রক্তাক্ত করাসহ বিএমএসএফ চট্টগ্রাম সভাপতি কেএম রুবেলসহ ৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক হয়রাণী মামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
অবিলম্বে সরকারকে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে যুগোপযোগি আইন প্রণয়ন, সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন, সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালাসহ বিএমএসএফ ঘোষিত ১৪ দফা বাস্তবায়নে দাবি জানানো হয়।

এদিক বিএমএসএফ’র আয়োজনে ঝালকাঠি, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কালিগঞ্জ, নরসিংদী, ফেনী, আশুলিয়া, গাজীপুর, কাঠালিয়া, পিরোজপুর, পাইকগাছা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ বন্দর, কালকিনি শাখাসহ বিভিন্ন প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন বিএমএসএফ’র ডাকে বিভিন্ন জেলা উপজেলায় প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।

বিএমএসএফ’র পক্ষ থেকে ডিসি কান্ডের বিরুদ্ধে সকল সাংবাদিক এবং সংগঠনসমুহকে বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহবান জানানো হয়েছে।