বায়ুদূষণের সঙ্গে করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) মৃত্যুর হার বাড়ার সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ বেশি, সেসব এলাকায় করোনাভাইরাস আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে এবং মৃত্যুর হারও বেশি হয়।
ভাইরাসটির সঙ্গে বায়ু দূষণের একটি সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন হার্ভার্ডের বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা সেখানেই বেশি যেখানে বায়ু দূষণ প্রবল।
গবেষকরা মনে করছেন, প্রবল বায়ু দূষণ এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুর হার ১৫ শতাংশ বেশি।
গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরোপের দেশ ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট যত মানুষের মত্যু হয়েছে, তার অর্ধেকই দেশটি লম্বার্ডি প্রদেশের বাসিন্দা। আর এই লম্বার্ডি ইতালির সবচেয়ে দূষিত এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
ইউরোপের ৬৬ এলাকার ওপর চালানো একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মোট মৃত্যুর ৭৮ শতাংশ ঘটেছে মাত্র ৫টি এলাকায়। আর এই ৫টি এলাকার প্রত্যেকটিই নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড গ্যাসে ভরপুর এবং ব্যাপকভাবে দূষিত।
কিন্তু কী কারণে বায়ুদূষণ এলাকায় মৃত্যুর হার বেশি। এ প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রবল বায়ু দূষণ করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও দুর্বল করে দেয়। বায়ু দূষণ বিশেষ করে শ্বাস কষ্ট বাড়ায় এবং হৃদযন্ত্রে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা বেশি মরছে কেন? এর কারণ হিসেবে গবেষণায় তারা পেয়েছেন যে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা বেশির ভাগই অনুন্নত এলাকায় বাস করে।। সেসব এলাকায় তারা প্রবল বায়ু দূষণের মধ্যে জীবনযাপন করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় যুক্তরাজ্যে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কৃষ্ণাঙ্গদের মৃত্যুহার ৩.৫ ভাগ বেশি। আর পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতদের মৃত্যুহার বেশি ২.৫ ভাগ। আর এরা বেশির ভাগই বাস করে অপেক্ষাকৃত দূষিত এলাকায়।
কডাউনের এই সময়ে বায়ু দূষণ কমার কারণে শুধু ইউরোপে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বেঁছে গেছেন ১১ হাজার মানুষ।
বিজ্ঞানীরা পরামর্শ দিয়েছেন, যেহেতু লকডাউন প্রত্যাহারের দিকে এগোচ্ছে বিশ্ব। এখনই বায়ুদূষণ কমানোর কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।