চট্টগ্রামে বাকলিয়া থানা এলাকায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত এক ব্যক্তির বাড়ি লকডাউনের নামে ওই পরিবারের শিশুসহ ছয় সদস্যকে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
করোনায় মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে ফোনে বিভিন্ন মহলে সহযোগিতা চাইলেও কোনো সহায়তা পাননি তারা।
অপরদিকে পরিবারটির কয়েকজন সদস্যের করোনার উপসর্গ দেখা দিলেও তাদের নমুনাও সংগ্রহ করেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর একে এম আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে করোনায় মৃতের বাড়ি তালাবদ্ধ করা হয়েছে বলে পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, কেবল ওই পরিবারটিকে তালাবদ্ধ করা হয়নি। বরং বাড়িটির মূল গেইটে তালা দেওয়া হয়েছে। বাড়িটিতে অন্তত ৫০ জনের বসবাস আছে। সবাই বাড়ির ভিতর লকডাউনে আছেন।
প্রসঙ্গত, বাকলিয়া থানার রাহাত্তরপুল চান্দা পুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা আরমান আহাম্মেদ (৫৫) গত সোমবার (৪ মে) মারা যান। মৃত্যুর আগে ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। মারা যাওয়ার পর এই ব্যক্তির নমুনার ফলাফল পজিটিভ পাওয়া যায়।
মৃত ব্যক্তির করোনা পজিটিভ হওয়ায় তার বাড়িটি লকডাউন করেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম আরিফুল ইসলাম ডিউক।
মৃতের ছেলে আবিদ অভিযোগ করে জানান, সোমবার করোনা পজিটিভ খবর পাওয়ার পর পরই স্থানীয় একদল এলাকাবাসী এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসে সবাইকে বাসার ভিতরে থাকতে বলে লকডাউনের নামে বাসার বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে রাখেন। ঘরের ভিতরে এক বছর বয়সী একটি শিশুসহ পরিবারের ছয় জন সদস্য সবাই আটকে আছেন গত পাঁচ দিন ধরে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের খাবার-দাবার প্রদান বা কোনো খোঁজ খবর পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আত্মীয় স্বজন এবং বাড়িওয়ালার সহায়তায় তারা বাইরে থেকে কিছু খাবার পেয়েছেন।
অপরদিকে বাসার ভিতরে আবদ্ধ থাকা পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যের করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাদের নমুনা পরীক্ষার জন্য বার বার ফোন করে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের নমুনা সংগ্রহ করেনি।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম আরিফুল ইসলাম ডিউক বলেন, ‘‘আমি এ পর্যন্ত তিনটি জায়গা লকডাউন করেছি। এর মানে এই নয় যে, ওই তিন জায়গায় কারো সাথে আমার শত্রুতা ছিল। একটা এরিয়া বা ভবন লকডাউনের নির্দেশনা পাওয়ার পরেই সেখানে ছুটে যাই। এই নির্দেশনা স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে থানায় আসে, থানা থেকে আমার কাছে এবং থানার প্রতিনিধি ও আমি একসাথে গিয়ে লকডাউন করি।
‘ওয়ার্ডবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থেই এটা করা হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশনায় করা হয়েছে। এটা নিয়ে কেউ কেউ রাজনীতি করছে।”
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘লকডাউনে থাকা মৃত ব্যক্তির পরিবারের সব সদস্যকে আজ রোববার (১০ মে) সকালেই করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য বিআইটিআইডিতে পাঠানো হবে। শিশুসহ পরিবারটিকে আবদ্ধ করে রাখা এবং তাদের খাবার দেওয়ার বিষয়টি জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসন তদারকি করছে।’
সুত্র :রাইজিংবিডি