তীব্র জ্বর থেকে শুরু করে গন্ধ বা স্বাদের অনুভূতি হারানো- নতুন করোনাভাইরাস এ ধরনের বেশকিছু অপ্রীতিকর উপসর্গের কারণ হিসেবে পরিচিত।
আর এবার বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, আপনার যদি কোভিড-১৯ রোগ শনাক্ত হয়ে থাকে তাহলে গন্ধ হারানোর উপসর্গ আসলে একটি ভালো জিনিস হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ইউসি সান দিয়েগো হেলথের গবেষকরা বলেছেন, গন্ধ ক্ষমতা হ্রাস ইঙ্গিত দেয় যে- এই রোগটি আপনার মধ্যে হালকা পর্যায়ে রয়েছে।
গবেষণার নেতৃত্বদানকারী ডা. ক্যারল ইয়ান বলেন, ‘নরমোস্মিয়া বা গন্ধবোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া হলো কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে একটি স্বতন্ত্র পূর্বাভাসকারী। পূর্ববর্তী গবেষণায় আমরা দেখতে পেয়েছি যে, জ্বর এবং অবসন্নতার পরে ঘ্রাণ সংক্রান্ত কার্যকারিতা হ্রাস এ রোগের সাধারণ একটি প্রাথমিক লক্ষণ।’
তাঁর মতে, নতুন গবেষণায় যা উল্লেখযোগ্য তা হলো, গন্ধ নেওয়ার অনুভূতি হ্রাস উপসর্গ এমন ভবিষ্যদ্বাণী হতে পারে যে, সার্স-কোভ-২ সংক্রমণ ততটা মারাত্মক হবে না এবং হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা কম।
ডা. ইয়ান বলেন, ‘সংক্রমিত কোনো ব্যক্তির যদি গন্ধ পাওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়, তাহলে মনে হয় তারা আরো অন্তর্নিহিত ঝুঁকির কারণগুলো বাদ দিয়ে মৃদু লক্ষণগুলো অনুভব করবে।’
গবেষকরা ১৬৯ জন করোনা রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন, মার্চের ৩ তারিখ থেকে এপ্রিলের ৮ তারিখের মধ্যে এ রোগীদের পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ এসেছিল। এর মধ্যে ২৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। যা হোক, বিশ্লেষণে দেখা গেছে যাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি, তাদের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়া রোগীদের গন্ধের ক্ষয় বা স্বাদ নষ্ট হওয়ার উপসর্গ উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল।
গবেষণা প্রকল্পটির অন্যতম গবেষক ডা. অ্যাডাম ডিকন্ডে বলেন, কোভিড-১৯ রোগে গন্ধ নষ্ট হওয়া রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা ১০ গুণ কম ছিল, যাদের গন্ধের ক্ষতি হয়নি তাদের তুলনায়।
তিনি আরো জানান, অ্যানোসমিয়া (কোনো রকম গন্ধ না পাওয়া) অন্য কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য দশার সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না। আর এ ব্যাপারটি ধারণা দিচ্ছে যে, এটি সত্যই একটি স্বাধীন ফ্যাক্টর এবং কোভিড-১৯ রোগের প্রাথমিক পর্যায় হিসেবে চিহ্নিত করতে কাজ করতে পারে।’
গবেষকদের মতে, ভাইরাসটি প্রাথমিকভাবে নাক ও গলার ওপরের অংশে সংক্রমণ করে, যা আপনার গন্ধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে থাকে। ভাইরাসটি ফুসফুস পৌঁছে গেছে, এমন ক্ষেত্রেগুলোর তুলনায় যা হালকা সংক্রমণ।