ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানের গৌরবময় ঐতিহ্যের অধিকারী দলটি ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে যাত্রা শুরু করে।

এরপর নানা ঐতিহাসিক বাঁকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দলে পরিণত হয় এবং তাদের নেতৃত্বেই দেশ পরাধীনতার শিকল থেকে মুক্ত হয়।

এদিকে করোনা মহামারির কারণে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বড় কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেনি আওয়ামী লীগ। তারা সীমিত পরিসরে অনলাইনে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করবে। দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাঙালি জাতির প্রতিটি মহৎ, শুভ ও কল্যাণকর অর্জনে আওয়ামী লীগের ভূমিকা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে আমরা আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ভবিষ্যতেও আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ, উন্নত ও আধুনিক সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে প্রিয় বাংলাদেশ।’

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ। জন্মলগ্নে এই সংগঠনের নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’। ১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন ঢাকার কেএম দাস লেনে অবস্থিত ঐতিহাসিক ‘রোজ গার্ডেন’ প্রাঙ্গণে জননেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুসারী মুসলিম লীগের প্রগতিশীল কর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ নামে পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংগঠনটির প্রথম কমিটিতে মওলানা ভাসানী সভাপতি ও শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক এবং জেলে থাকা অবস্থায় যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি : প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে সূর্যোদয়ের সময় কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এরপর সকালে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে দলের শীর্ষ নেতাদের শ্রদ্ধা নিবেদন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে আওয়ামী লীগের স্বল্পসংখ্যক সদস্যের প্রতিনিধিদল টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।

এ কর্মসূচিতে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন উপস্থিত থাকবেন।

এদিন বিকেলে পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ নিহত সব শহীদ, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদ, বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে মৃত্যুবরণকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত সবার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সব সদস্যের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।