সানাউল্লাহ দোহা(কাতার)প্রতিনিধি।

২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতার নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের জন্য নতুন এক টুর্নামেন্ট আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘প্যান-আরব ফুটবল টুর্নামেন্ট’ নামের এই আসরটি বসবে ২০২১ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে।বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) কাতারের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এমনটাই জানিয়েছে। ফিফার পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে সম্মতি আদায় করে নিয়েছে কাতার।২২ জাতির এই আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ২০২২ বিশ্বকাপের জন্য নির্মিত স্টেডিয়াম ও অন্যান্য স্থাপনসমূহ পরীক্ষা করে দেখা। করোনা মহামারির কারণে এই স্থাপনাগুলো পরীক্ষা করার এর চেয়ে ভালো উপায় আর নেই বলেই এমন সিদ্ধান্ত।গত ১৫ জুন বিশ্বকাপের জন্য নির্মিত ‘এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম’র উদ্বোধন করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণের কথা চিন্তা করে উদ্বোধন করা হয় ভার্চুয়াল মাধ্যমে। তবে স্থাপনাটি পরীক্ষা করার জন্য এখন পর্যন্ত এতে কোনো ম্যাচ আয়োজন সম্ভব হয়নি।২০২২ বিশ্বকাপের যে ৮টি স্টেডিয়াম নির্ধারণ করা হয়েছে, তার মধ্যে ২০১৯ সালের মে মাসে উদ্বোধন হওয়া আল-জানুব স্টেডিয়াম এবং সংস্কার করা আল-খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছে। এর আগে ইউরো-২০০০ কে সামনে রেখে গত মার্চে ‘দ্য কাতার এয়ারওয়েজ ইন্টারন্যাশনাল কাপ’ নামের একটি মিনি টুর্নামেন্ট আয়োজন করার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে সেই আসর মাঠে গড়াতে পারেনি। তবে এবার নতুন টুর্নামেন্ট নিয়ে বেশ আশাবাদী কাতার।এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, এই নতুন টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে আয়োজকরা বিশ্বকাপ স্থাপনাগুলো ব্যবহার করে দেখতে পারবেন। এবং এই আসর আয়োজন বিশ্বকাপের পরেও কাজে লাগবে। টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো সব বিশ্বকাপের জন্য নির্ধারিত স্টেডিয়ামেই আয়োজন করা হবে।সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘২০২২ বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম ও অনুশীলনের জায়গা ব্যবহারের ফলে সমর্থক, খেলোয়াড় এবং কর্মকর্তাদের জন্য যাতায়াত ও থাকার জায়গাসহ আয়োজক দেশের সব সুবিধা উপভোগ করার সুযোগ থাকছে।’কোন কোন দেশ কাতারের এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবে তা এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। তবে কাতারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সৌদি আরব, বাহরাইন, মিশর এবং সংযুক্ত আরব এতে অংশ নেয় কিনা সেটাই দেখার বিষয়। কারণ, সন্ত্রাসবাদ এবং ইরানের সমর্থন করার অভিযোগে এই ৪ দেশ ২০১৭ সাল থেকে কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে।৪ আরব দেশের অভিযোগ অস্বীকার করলেও কাতারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এখনও স্বাভাবিক হয়নি। এর আগে ২০১৭ সালে এক আঞ্চলিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল কাতার। কিন্তু তিন উপসাগরীয় দেশ এতে অংশ নিতে অস্বীকার করে। পরে অবশ্য ভেন্যু কুয়েতে সরিয়ে নেওয়ার পর তারা রাজি হয়। তবে ২০১৯ সালে সম্পর্কের বরফ কিছুটা গলতে দেখা যায়। কাতারের আয়োজিত একটি টুর্নামেন্টে অংশ নেয় ওই ৩ দেশ। এবার কাতার আরও একবার হাত এগিয়ে দিয়েছে। ২০২১ সালে অনুষ্ঠেয় টুর্নামেন্টের প্রচারণামূলক একটি ছবিতে তারা কাতার, সৌদি আরব এবং বাহরাইনের পতাকা হাতে সমর্থকদের হাসিমুখ ব্যবহার করেছে।এদিকে প্রথমবারের মতো গত বৃহস্পতিবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কাতার বিশ্বকাপের স্থাপনা নির্মাণের সঙ্গে জড়িত এক শ্রমিক। এছাড়া গত মার্চ থেকে বিশ্বকাপ স্থাপনার নির্মাণ শ্রমিকদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১০২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও স্থাপনা নির্মাণের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।