সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ রবিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে মারা যান। গত ২৬ জুন বিকেলে সিরাজগঞ্জে মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে তাকে কোপানো হয়। নিহত বিজয় জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ও জামতৈল সরকারি হাজি কোরপ আলী ডিগ্রি কলেজ শাখার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকার জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে তিনি আইসিইউতে কোমায় ছিলেন। তিনি ক্লিনিক্যালি ডেড বলে জানিয়েছিল হাসপাতালের একটি সূত্র।
সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, প্রভাবশালী নেতা মোহাম্মদ নাসিম মারা যাওয়ার পর তার অনুসারীদের মধ্যে এক ধরনের অভিভাবকশূন্যতা তৈরি হয়েছে। মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জ জেলার প্রতিটি উপজেলার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেন। তার সন্তান ও সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় কেন্দ্র কিংবা জেলার রাজনীতিতে এখনো তেমন প্রভাব গড়ে তুলতে পারেননি। এই সুযোগে নাসিমের অনুসারীদের কোণঠাসা করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে তাদের বিরোধীপক্ষ।
এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের দুজন সাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব আহমেদ জিহাদ ও আল-আমিন (২০) এবং ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান বিজয়, জাহিদুল ইসলাম ও সাগরকে আসামি করে মামলা হয়। আসামিরা সবাই সিরাজগঞ্জ সদর ও কামারখন্দ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাবিবে মিল্লাত মুন্নার অনুসারী বলে দাবি করেছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আব্বা চলে যাওয়ার পরে সিরাজগঞ্জে যা ঘটছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ছাত্রলীগের ছেলেটা ক্লিনিক্যালি ডেড, এখন শুধু তার হার্টবিট চলছে। আমাদের জন্য বিষয়টি খুবই দুঃখের, বেদনার। আব্বার পুরনো একজন সহকর্মী যিনি দুইবার ইউপি চেয়ারম্যান, তাঁকেও কোপানো হলো। বিষয়গুলো আমি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও জানিয়েছি। আমরা চাই সবাই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিয়ে সংগঠন করুক।’
এর আগে সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহমেদ বলেছিলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতাকে কোপানো হয়েছে। সে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এ ধরনের নৃশংস ঘটনার মধ্য দিয়ে মোহাম্মদ নাসিমের অনুসারীদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার বার্তা দিতে চাইছে বিরোধীপক্ষ।’