বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের চরম অবহেলা, অবজ্ঞা, অজ্ঞানতা এবং তাদের যে একটাই লক্ষ্য- চুরি, দুর্নীতি সেই কারণেই আজকে করোনা পরিস্থিতি এই অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় উত্তরার বাসা থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সিলেটে ‘এমএ হক স্বাস্থ্যসেবা’ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে- বিদেশ থেকে যারা ফেরত আসছে তাদের স্ক্যানিং টেস্ট করা হয়েছে। সেই টেস্টে সবাই করোনামুক্ত। অথচ বিবিসির একজন সাংবাদিক হজ ক্যাম্পে গিয়ে যাত্রীদের মধ্য থেকে একজনকে জিজ্ঞাসা করেছেন। জবাবে ওই যাত্রী বলেছেন যে, আমাদের কোনো স্ক্যানিংই হয়নি।
তিনি বলেন, দেখেন, কতটা দায়িত্বহীন হতে পারে এই স্বাস্থ্য অধিদফতরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কতটা উদাসীন হতে পারে সরকার। এতো ঘটনার পরও, হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করার পরও, লাখ লাখ লোক আক্রান্ত হওয়ার পরও তাদের ন্যুনতম যে দায়িত্ব, সেটা পালন করছে না।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের বলেন, সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকার কোনো দরকার নেই। আমাদেরই চেষ্টা করতে হবে বাঁচার জন্য, চেষ্টা করতে হবে যেন এটা (করোনাভাইরাস) না ছড়ায়, এই সংক্রমণ যেন না বাড়ে। এই সরকারের যেহেতু জনগণের সাথে সম্পর্ক নেই, জনগণের জীবন-জীবিকার প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই, সেই কারণে তাদের দিকে তাকিয়ে থেকে বাংলাদেশের মানুষ এই ভয়াবহ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাবে না।
রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার ভুয়া সার্টিফিকেট সরবরাহের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের প্রধান সাহেদ সাহেব কোনো পরীক্ষা না করেই করোনা টেস্টের রেজাল্ট দিচ্ছেন। এটা তো একদিকে জীবনের প্রশ্ন, অন্যদিকে সমস্ত বিশ্বে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে, এটা অলরেডি গ্লোবাল মিডিয়াতে চলে গেছে। এটা একটা না, এমন বহু ঘটনা আছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরে দেখলাম, একজন মিঠু সাহেব যাকে বলা হচ্ছে তিনি নাকি গোটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে গিলে ফেলেছেন।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর থেকে মুক্তির একটি মাত্রই পথ, সেই পথ হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
সিলেট জেলা সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ডা. শামীমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কয়েস লোদীর পরিচালনায় ভার্চুয়াল এই আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় নেতা সাখাওয়াত হাসান জীবন, কলিম উদ্দিন মিলন, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা সভাপতি আলী আহমদ, প্রয়াত এম এ হকের ছেলে ব্যারিস্টার রিয়াসাদ আজিম হকসহ সিলেট মহানগর নেতারা বক্তব্য রাখেন।