গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনও বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া বাঙালি নদীর পানির তোরে বোচাদহ গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ২০০ মিটার ভেঙে গেছে। এতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ, রাখালবুরুজ ও কোচাশহর ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম।
এছাড়া সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ীর উপজেলার ঘাঘট নদীর তীরবর্তী এলাকা এবং সদর উপজেলার কুপতলা, খোলাহাটি, ঘাগোয়া, গিদারী ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে গত এক মাস থেকে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের ৩৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার প্রায় দেড় লাখ মানুষ চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন। সরকারি ত্রাণ তৎপরতা চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় তারা চরম কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৩ হাজার ২৪৬ হেক্টর জমির আমন রোপা, পাট, আউশ ধান ও শাক সবজি পানিতে নিমজ্জিত। দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে মানুষ চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। ক্ষতির শিকার হয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার কৃষক।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন আবদুল মতিন জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি, গোবিন্দগঞ্জ, সাদুল্লাপুর ও সদরসহ ৬ উপজেলায় ৩৮টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। মোট ১ লাখ ৪৮ হাজার ১৩৮ ব্যক্তি এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত দুর্গত এলাকায় ৫৫০ মেট্রিকটন চাল, ৫ হাজার ৬৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও নগদ ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিনি আরও জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ ও ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলো মেরামতের কাজ চলছে।