এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বাঘ বাড়াতে পণ, রক্ষা করি সুন্দরবন’। আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঘ দিবস। করোনার কারণে এবারের বাঘ দিবসে বড় কোনো অনুষ্ঠান থাকছে না। তবে ওয়েবিনারে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনায় পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিবেন।

এদিকে বাঘ বাঁচাতে সুন্দরবনের ৬০ কিলোমিটার এলাকায় এবার প্রথমবারের মতো নাইলনের নেট বসাতে যাচ্ছে বন বিভাগ। এর মধ্যে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের জয়মনির ঘোল থেকে দাসের ভাড়ানি পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার এবং পশ্চিম বন বিভাগের আওতায় কইখালী থেকে কদমতলা পর্যন্ত বাকি ২০ কিলোমিটার বসানো হবে। পাশাপাশি বাঘের সংখ্যা বাড়াতে ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। বন বিভাগ জানায়, চলতি বছরের মধ্যে অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ করা যাবে প্রকল্পটি।

এদিকে নেট প্রকল্পের পরিচালক জাহিদুল কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দুটি কারণে নাইলনের নেট বসানো হচ্ছে। এক. মানুষ ও বাঘের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা সংঘর্ষ কমানো এবং দুই. সুন্দরবনে এখন যেভাবে যত্রতত্র মানুষ ঢুকে পড়ে, সেটা বন্ধ করা।’ ভারতের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশটিতে নাইলনের নেট দেওয়ায় তারা বেশ সুফল পেয়েছে। সেখানে মানুষ ও বাঘের মধ্যকার সংঘর্ষ কমে এসেছে। নাইলনের নেট বসানোর সুফল বিষয়ে ভারতীয় সাংবাদিক জয়ন্ত বসু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘উত্তর চব্বিশ পরগনায় সুন্দরবন আর লোকালয় খুবই পাশাপাশি। নাইলনের নেট বসানোর আগে সেখানে প্রায় সময়ই বাঘে-মানুষে লড়াই হতো। তবে নাইলনের নেট বসানোর পর তা অনেকটাই কমে এসেছে।’

এদিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়ানোরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাঘিনী ও বাঘের অনুপাত থাকার কথা চারের বিপরীতে এক। কিন্তু এখন তা আছে দশের বিপরীতে এক। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের অবস্থা খুবই নাজুক। সেখানে স্ত্রী বাঘের তুলনায় পুরুষ বাঘ খুবই কম। পশ্চিম থেকে পুরুষ বাঘ ধরে পূর্ব বন বিভাগে স্থানান্তরের জন্য একটি আধুনিক প্রযুক্তির লঞ্চ কেনা হবে।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় আইলা থেকে নিয়ে সর্বশেষ আম্ফানে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারত, যদি সুন্দরবন না থাকত। এ ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির সঠিক চিত্র তুলে আনতে ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এই প্রকল্পের আওতায় ১২টি ড্রোন কেনা হবে। ড্রোন কেনা হলে খুব কম সময়ে যেকোনো ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বের করে সে অনুযায়ী ত্বরিৎ পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হবে। সুন্দরবনের প্রতি রেঞ্জে চারটি করে ড্রোন দেওয়া হবে।