আবেগ তাঁকে কখনো স্পর্শ করেছে বলে মনে হয়নি। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিং ধোনির কাছে বিশ্বকাপ ফাইনাল জয়-পরাজয় বিশেষ হেলদোল ফেলে না। প্রবল চাপের মুখে ভেঙে পড়েন না। এমনকি চারপাশের প্রশংসা-সমালোচনাও তাঁকে কদাচিৎ স্পর্শ করেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণাও দিলেন কি নির্লিপ্ততার সঙ্গে! ভাবা যায়, তাঁর মাপের একজন তারকা ইনস্টাগ্রামে একটা বার্তায় জানিয়ে দিলেন, ‘ক্যারিয়ারজুড়ে ভালোবাসা আর সমর্থনের জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। ধরে নিন ১৯২৯ ঘণ্টা (গতরাত ৭টা ২৯ মিনিট) থেকে আমি অবসরে।’
ধোনির পক্ষেই সম্ভব এভাবে হুট করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে ডুব দেওয়া। টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন একটি সিরিজের মাঝপথে, কাউকে কোনো পূর্বাভাস না দিয়েই। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার নিয়ে সংশয়াচ্ছন্ন ভারতীয় ক্রিকেটপাড়াও তাই ধরে নিয়েছিল, ঘোষণাটা আসবে হুট করেই। খুব আশাবাদীরা ভেবেছিলেন, আরেকটা যুদ্ধ না জিতে যাবেন না ‘মাহি’। কিন্তু ভারতকে ২০০৭ ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি, ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ আর ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতানো অধিনায়ক প্রথমটাই বেছে নিয়েছেন। কোনো মহড়া ছাড়াই জানিয়েছেন, আর নয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০০৪ সালে ঢাকায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত ঝাড়খণ্ডের ঝাঁকড়া চুলের মহেন্দ্র সিং ধোনির ১৫ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের যবনিকাপাত হলো কিনা একটি বাক্যে!
ক্রিকেটীয় গুণাবলি, দর্শন তো বটেই, এমন মানসিকতাই অন্যদের চেয়ে আলাদা করে রাখবে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। আর আইসিসির সব ইভেন্টজয়ী একমাত্র অধিনায়কের নামও মহেন্দ্র সিং ধোনি।