জাতীয় পতাকার রং অনুসরণ করে (আদলে) একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিঁড়ি রং করার ঘটনায় গাইবান্ধায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। মাঝে লাল ও দুই পাশে সবুজ রঙে সৃজন করা হয় সিঁড়িটি। স্থানীয় লোকজনের নজরে এলে বিষয়টি নিয়ে এলাকার সুধীজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিচার দাবি করেন।
স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার বিকেলের দিকে রং করা হয় গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর গিদারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় ওঠার ওই সিঁড়িটি। পিইডিপি-৩ ও স্লিপ প্রকল্পের ২ লাখ ৪৪ হাজার টাকার বিভিন্ন সংস্কার কাজ করার অংশ হিসেবে ওই রঙের কাজ করা হয়। এতে বিদ্যালয় ভবন নতুনভাবে রং করার পাশাপাশি ভবনের বিভিন্ন অংশে চিত্র ও বর্ণ সৃজনসহ সিঁড়ি সৃজনের কাজ করা হয়। বুধবার বিকেলে চিত্রশিল্পী সাদ্দাম হোসেন সিঁড়িটি লাল-সবুজে সৃজন করলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। সিঁড়িটির মাঝে লাল এবং দুপাশে সবুজ রঙে সৃজন করা হয়। জাতীয় পতাকার অনুকরণে রং করায় তখনই এলাকার অনেকে প্রতিবাদ জানায়। এতেও কর্ণপাত না করে সাদ্দাম তার কাজ শেষ করে। ওই রং পায়ে দলে অনেকে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে যায় এবং নিচে নেমে আসে।
এলাকাবাসী বলে, এ ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। সিঁড়িতে জাতীয় পতাকার আদলে রং করা হয়েছে কার নির্দেশে? তার বিচার চায় এলাকাবাসী। এতবড় একটি সংস্কার কাজ করা হচ্ছে, অথচ কোনো তদারক কমিটি নেই। কখনো তা কারো চোখে পড়েনি। কেন তদারকি কমিটি গঠন করা হয়নি? আর যদি তদারকি কমিটি গঠন করা হয়ে থাকে তাহলে সেই কমিটি কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারবে না।
অভিযুক্ত চিত্রকর সাদ্দাম হোসেন জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনামোতাবেক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশে রঙের কাজ করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাদিরা বেগমের কাছে এ বিষয়ে তার মোবাইল ফোনে (০১৭২৬-৯৭৭৪৩৩) জানতে চাইলে তিনি সাক্ষাৎকার দিতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, কোনো ত্রুটি হয়ে থাকলে অতিদ্রুতই তা নিরসন করা হবে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ২ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম জাকির বিষয়টিতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি বিষয়টি অবগত ছিলাম না। স্থানীয় লোকজনের মুখে শুনে অবাক হই। আমাদের মহান জাতীয় পতাকার আদলে সিঁড়ি রং করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে বিষয়টি অতিদ্রুত সুরাহার আশ্বাস দেন।
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনার রশিদ ইদু বলেন, জাতীয় পতাকার রং নিয়ে যদি কোনো অবমাননার ঘটনা ঘটে তাহলে আমি তার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার দাবি করছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হোসেন আলী বলেন, যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।